রিকশাচালক, কৃষক, শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষের সংসদে গিয়ে নিজেদের কথা বলার সুযোগ থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
শনিবার (২২ নভেম্বর) রাতে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার আলোয়াখোয়া ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণা ও আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ বক্তব্য দেন।
সারজিস আলম বলেন, আমরা রাজনৈতিক যোগ্যতাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। এতদিন বিভিন্ন উচ্চবিত্ত পেশাজীবীরা সংসদে গিয়ে দেশের মানুষের প্রকৃত সমস্যার প্রতিফলন ঘটাতে পারেননি। তারা তাদের জায়গা থেকে মানুষের প্রতি যে দরদ অনুভব করা, মানুষের জন্য কাজ করা, ন্যায়নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, ৩০০ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে যদি ১০ জন কৃষক, রিকশাচালক বা শ্রমিক সংসদে যান, এতে সংসদ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। বরং আমরা নতুন করে দেখতে চাই যে, ওই মানুষগুলো গিয়ে তারা তাদের অধিকারের কথা বলুক। কারণ যারা এমপি হয়ে ওই সংসদে এতদিন ধরে রেখেছে, আমরা দেখেছি তারা রিকশাওয়ালাদের কষ্ট ভুলে গেছে, কৃষকের কষ্ট ভুলে গেছে, অটো চালকদের কষ্ট ভুলে গেছে, শ্রমিকদের কষ্ট ভুলে গেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরকে আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রুপের দ্বারা পরিচালিত হতে দেখেছি। পিছন থেকে তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বড় বড় নেতাদের ছত্রছায়ায় এই বন্দরকে পরিচালিত করেছে। মাঝে মাঝে তারা তাদের জায়গা থেকে বিভিন্ন বিদেশি সহযোগিতা নিয়েছে। এই বন্দরে আমরা অসংখ্যবার দেখেছি যে তারা রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে সিন্ডিকেট তৈরি করেছে, এবং বন্দরকে কুক্ষিগত করে রেখেছে।
এই নেতা বলেন, তারা নির্ধারণ করত ওই বন্দরের মাদারভেসেল থেকে কোন মাল নামবে, কোন মাল নামবে না। এরকম অসংখ্য পণ্য বন্দরে নামার আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। অসংখ্য পণ্যকে নামার আগে কোটি কোটি টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। আমরা কখনো বলিনি যে এ জন্য বিদেশি কাউকে দিতেই হবে। কিন্তু সরকার যদি মনে করে পরিচালনার জন্য বিদেশের কোনো কোম্পানিকে দিতে হবে তাকে আমরা জবাবদিহিতার আওতায় আনবো, স্বচ্ছতার মধ্যে রাখব। দেশের অনেক কোম্পানিকে এতদিন দেখলাম, এবার বিদেশি কোম্পানি কীভাবে পরিচালনা করে সেটাও দেখতে চাই।
সারজিস আলম আরও বলেন, বন্দরটা তো বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে না। বরং এর তদারকি, ব্যবস্থাপনা এসব ঠিকঠাক করাই বড় বিষয়। দেশের জন্য যা ভালো হবে তাকেই দিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা আগামী সরকার। কিন্তু দেশের কোনো কোম্পানিকে দিয়ে লুটপাট, সিন্ডিকেট, রাজনৈতিক সুবিধা এগুলো চলতে দেওয়া যাবে না। দেশের জন্য উপকারী হলে বিদেশি কোম্পানিকে দিতেও আমাদের কোনো সমস্যা নেই।
































