• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

গাড়িচালকের পরিকল্পনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে অপহরণ


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২৪, ০৫:৩৬ পিএম
গাড়িচালকের পরিকল্পনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে অপহরণ

গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর ব্যক্তিগত প্রয়োজনে শেরপুর যাওয়ার সময় অপহরণের শিকার হন আইইউবিএটির শিক্ষার্থী কাজী হাসিবুর রহমান ওরফে হিমেল। এরপর ভুক্তভোগীর পরিবার তার সন্ধান না পেয়ে এদিন উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি করে। এ ঘটনায় মূল হোতা মালেকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। এছাড়া হিমেলকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন  অপহরণকারী চক্রের মূল হোতা ও পরিকল্পনাকারী মো. আব্দুল মালেক (৩৫), তার অন্যতম সহযোগী ও পরিকল্পনাকারী হিমেলের গাড়ি চালক সামিদুল ইসলাম (৩০), রনি নাবাল (৪১), রাসেল মিয়া (৩৪) ও বিল্লাল হোসেন (২৪)। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি ও দুটি ওয়াকিটকি সেট জব্দ করা হয়।

র‌্যাব জানায়, হিমেলের বাবা ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনি ব্যাটারি বিক্রির ব্যবসা করতেন। ৪ মাস আগে বাবা মারা যাওয়ায় পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার ব্যবসা পরিচালনা করতেন হিমেল।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, “অপহরণ চক্রের মূল হোতা মালেক। অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন হিমেলের গাড়ির চালক সামিদুল ইসলাম। সামিদুল ভুক্তভোগীদের বাসায় চার বছর ধরে গাড়ি চালক হিসেবে কর্মরত আছেন। এতে ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে তার একটি সুসস্পর্কের জায়গা তৈরি হয়। এছাড়াও সামিদুল ভুক্তভোগীর পারিবারিক আর্থিক ও সম্পত্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানতেন।”

খন্দকার আল মঈন বলেন, গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর অপহরণ চক্রের মূল হোতা মালেকের নেতেৃত্বে বাকি সদস্যরা একত্রিত হয়ে উত্তরার পাসপোর্ট অফিসের আশেপাশের একটি জায়গায় অপহরণের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সামিদুল ইসলাম হিমেলকে শেরপুরে ব্যবসার কাজে নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৬ ডিসেম্বর সকালে রাজধানীর উত্তরা থেকে হিমেলকে নিয়ে শেরপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন সামিদুল ইসলাম। পথে গাজীপুরের সালনা এলাকায় পৌঁছালে চক্রের বাকি সদস্যরা ৩-৪টি মোটরসাইকেল নিয়ে হিমেলের গাড়ি গতিরোধ করেন এবং তাদের অপহরণ করেন।

তিনি বলেন, হিমেলকে অপহরণের পর ধোবাউড়ায় তিন দিন অবস্থান করার পর চক্রের সদস্য বিল্লাল ছাড়া বাকিরা ভুক্তভোগীকে নিয়ে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকায় চলে যান। চক্রের সদস্যরা ভুক্তভোগীকে নিয়ে পাহাড়ি এলাকায় একটি করে পাহাড় পরিবর্তন করেন। এ সময় তারা হিমেলকে নির্যাতন করতেন এবং তার ভিডিও ধারণ করে মা তহুরা বিনতে হকের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিতেন।

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি আরও বলেন, মালেক ভুক্তভোগী হিমেলের মাকে একটি বিদেশি হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার থেকে ফোন করে অপহরণের বিষয়টি জানান। এরপর তার কাছে প্রথমে ২ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। কাছে মুক্তিপণের টাকা না পেলে হিমেলকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে হিমেলের মা মুক্তিপণের টাকা দিতে রাজি হন। চক্রের সদস্যরা হিমেলের মাকে চলতি মাসের ২৩ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে আসতে বলেন। হিমেলের মা বিষয়টি র‌্যাবকে জানান। 

Link copied!