রাজধানীসহ সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা যেন কমছেই না। প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো জায়গায় সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে। সদ্য বিদায়ী জুলাই মাসে ৫০৫ সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৭৬ জন নিহত ও ১০৫৫ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পাঠানো এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই মাসে রেলপথে ৪৭টি দুর্ঘটনায় ৪৮ জন নিহত ও ৫ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১৬টি দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ও আহত ১৫ এবং ৩৮ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫৬৮ দুর্ঘটনায় ৬৪৪ জন নিহত এবং ১০৭৫ জন আহত হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ সময়ে ১৮০ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৯৫ জন নিহত ও ১২২ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৫.৬৪ শতাংশ, নিহতদের মধ্যে ৩৮.৬১ শতাংশ ও আহতের ২৪.১৫ শতাংশ। এ মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে। সেখানে ১৫৭ সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭৩ জন নিহত ও ২৭১ জন আহত হয়েছে। অন্যদিকে সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে। সেখানে ২৩ সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত ও ১৩৮ জন আহত হয়েছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে জুলাই মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হচ্ছে— দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক অবাধ চলাচল; মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি; সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কে বাতি না থাকা; মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন; অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো; রেলক্রসিং-এ দায়িত্বরত ব্যাক্তির গাফিলতি। ফিডার রোড এবং আঞ্চলিক রোড থেকে হঠাৎ যানবাহন উঠে আসা।
দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশগুলো হচ্ছে— মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মতো ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, ডিজিটাল পদ্ধতিতে যানবাহনের ফিটনেস প্রদান; ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; সড়কে রোড সাইন, রোড মার্কিং অঙ্কন ও স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন যথাযতভাবে বাস্তবায়ন করা ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে ট্রাফিক আইন প্রয়োগ করা এবং গণপরিবহন বিকশিত করা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা।