আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সাপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এরআগে চলতি বছর (২০২৩ সাল) জুড়ে সরকারবিরোধীদের আন্দোলন-সংগ্রাম এবং সব অপশক্তিকে প্রতিরোধে মাঠে থাকবে টানা তিন মেয়াদে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা দল আওয়ামী লীগ। এ জন্য দলের তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের দৃঢ় ও সজাগ থাকতে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন দলীয়প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুধু তাই নয়, বাংলাদেশকে নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেবে না আওয়ামী লীগ। এছাড়াও দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতির গতিরোধ যাতে কেউ করতে না পারে, তার জন্য আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যন্ত প্রত্যেক নেতাকর্মী সজাগ থাকবে ও দৃঢ় থাকবে। যেকোনো অপকর্ম প্রতিরোধ করবে এই প্রতিজ্ঞা নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলার শপথ নেন নেতারা। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শনিবার (৭ জানুয়ারি) দলের নতুন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ ও জাতীয় কমিটির যৌথ সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দলের শীর্ষপর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
দলের নতুন কমিটি নিয়ে গোপালগঞ্জ থেকে আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। আর এই পথচলার শুরুতেই সরকারবিরোধীদের যেকোনো অপকর্ম প্রতিরোধ করার প্রতিজ্ঞা করেন তিনি। পাশাপাশি দলের নেতা-কর্মীদের দৃঢ় ও সজাগ থাকতে নির্দেশনা দেন।
সর্তক ও প্রতিরোধ গড়বে আওয়ামী লীগ
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, “বিএনপি-জামায়াত ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল। তাদের ঘৃণা জানাতে হবে। তারা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।” হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আগামীতে যদি একজন মানুষকেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত করে, তাহলে যে হাত দিয়ে আগুন দেবে, ওই আগুনে সেই হাত পুড়িয়ে দেওয়া হবে। যে হাতে মানুষ খুন করবে, তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া হবে। বিএনপি-জামায়াত আন্দোলন করতে চায় আমরা বাধা দেব না। তবে আন্দোলনের নামে কোনো রকমের নাশকতা কিংবা উন্নয়নশীল দেশের ক্ষতিসাধন, আর্থসামাজিক ক্ষতি সাধন করতে চাইলে তাদের উপযুক্ত জবাব জনগণ দেবে।”
শুধু উন্নয়ন আর উন্নয়নে আওয়ামী লীগ
দেশের মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, বিনামূল্যে করোনার টিকা দেওয়াসহ অবকাঠামো উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “তারা বলে আওয়ামী লীগ নাকি দেশের সর্বনাশ করেছে। মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন কী তাদের সর্বনাশ করা? এগুলো কী মানুষের ক্ষতিসাধন করা? তাদের জিজ্ঞেস করতে হবে ক্ষতিটা দেখল কোথায়?” আগামীতে গোপালগঞ্জে এলে আগে কোটালীপাড়ায় যাবেন বলে নেতা-কর্মীদের জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ এবং উপদেষ্টা পরিষদের নেতাদের টুঙ্গিপাড়া সফরের অনুরোধ জানান।
কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ
গোপালগঞ্জের টঙ্গিপাড়ায় নতুন কমিটির যৌথ সভায় নতুন বছরের দলীয় কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয় এবং সেই কর্মসূচি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আগামী ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি।