• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২০ মুহররম ১৪৪৫

সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষণে কোনো আপস নয়: কাদের


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২১, ০৪:৫৬ পিএম
সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষণে কোনো আপস নয়: কাদের

সংখ্যালঘুদের অধিকার ও স্বার্থ সংরক্ষণে কোনো আপস নয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সোমবার (৩০ আগস্ট) ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান। আলোচনা সভাটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটি ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “সাম্প্রদায়িক অপশক্তি আঘাত হানে নানা কৌশলে। তাদের অপচেষ্টা এখনো চলছে, তারা এখনো সক্রিয়। বিষদাঁত ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। তাই আমাদের সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। আমরা বারবার আমাদের নেতা-কর্মীদের পরিষ্কারভাবে এই বার্তা দিয়ে যাচ্ছি যে, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ও সংখ্যালঘুদের স্বার্থ ও অধিকার সংরক্ষণে শেখ হাসিনার সরকারের অবস্থান। এখানে কোনো আপস নেই।”

সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, “একটি মহল আছে, তারা দুর্বৃত্ত। এদের কোনো রাজনীতি নেই। এই দুর্বৃত্তায়ন যারা করে তারা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে হামলা চালিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার চক্রান্ত করে। এটা সরকারের বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র।”

২০০১ সালে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলার কথা স্মরণ করে তিনি আরও বলেন, “২০০১ সালের স্মৃতি আজও মুছে যায়নি। কীভাবে সংখ্যালঘুরা, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সেদিন রাষ্ট্রযন্ত্রের শ্বেতসন্ত্রাসের শিকার হয়েছিল। কত মন্দির ভাঙা হয়েছিল, কত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছিল এবং কত নারী নির্যাতিত হয়েছিল, লাঞ্ছিত হয়েছিল। সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা যেখানে যেখানে এই তাণ্ডব চলেছে সেখানে ছুটে গিয়েছিলেন। তিনি সেদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।”

শেখ হাসিনার সরকার সংখ্যালঘুদের পাশে আছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, “মাঝে মাঝে বিচ্ছিন্নভাবে একটি অশুভ চক্র, একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এ দেশে হাজার বছরের ঐতিহ্যে আঘাত হানার অপচেষ্টা করে। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, শেখ হাসিনা যত দিন আছেন, তিনি আপনাদের সঙ্গে আছেন। আপনাদের কোনো ভয় নেই। আপনারা এই দেশের উন্নয়নের অংশীদার। আমরা একই আকাশের নিচে বাস করি। অভিন্ন বাতাসে শ্বাস নিই। অভিন্ন মেঘমালা থেকে ঝরে পড়া বৃষ্টি থেকে আমরা ফসল ফলায়। তাই বলব, বিভেদের কৃত্রিম প্রাচীর যারা গড়তে অপচেষ্টা করে, তারা সফল হবে না কোনো দিন।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, “হাজার বছর ধরে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীরা এ দেশে পারস্পরিক সম্প্রীতির মধ্যে বসবাস ও ধর্ম চর্চা করে আসছে। এখানে মসজিদ ও পূজামণ্ডপ পাশাপাশি, এক ধর্মের মানুষ অন্য ধর্মের অনুষ্ঠানে যোগ দেয় এবং ঈদ ও দুর্গোৎসবে যেভাবে সর্বজনীন উপস্থিতি এটা এক অনন্য সাধারণ দৃষ্টান্ত। বিপদে-আপদেও আমরা সহযোগী, সহমর্মী। আবহমান কাল থেকে এই চর্চা হয়ে আসছে এই বদ্বীপ জনপদে।”

ধর্মের নামে যারা অপকর্ম করে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, “ধার্মিক মানেই পরম সহিষ্ণু, কথা এবং আচরণে বিনম্র, উদার। ধর্ম অনুশীলন মানুষের মনের জানালা খুলে দেয়, জগৎকে চেনার সুযোগ করে দেয়। অথচ ধর্মের নামে আজকাল কিছু বিভ্রান্ত মানুষের অপকর্ম আমাদের ব্যথিত করে। সুনামগঞ্জের শাল্লায়, সম্প্রতি খুলনার রূপসায় যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে ও মন্দিরে যে হামলা হয়েছে, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর এবং যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং যারা ধরা পড়েনি তারাও ছাড় পাবে না। এটা আপনাদের আমি আশ্বস্ত করছি।”

এ সময় তিনি শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সকল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানান।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি আরও যুক্ত হন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। এছাড়া বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জীর সভাপতিত্বে ঢাকেশ্বরীতে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার ও ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

Link copied!