• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

‘মোহাম্মদপুরের পোলাপান ... টোকেন ছাড়াই ওপেন’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২১, ০২:৫৯ পিএম

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কিশোর গ্যাং ‘ভাইব্বা ল কিং’-এর গ্যাং লিডার মোহনসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এই গ্যাংটি কয়েক বছর ধরে মোহাম্মদপুর এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সন্ত্রাসী কার্যক্রম, চুরি-ডাকাতিসহ আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল।

মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) বেলা ১২টায় কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

এর আগে সোমবার (২২ নভেম্বর) রাতে মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থান এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪ জন এবং তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চাঁদ উদ্যানসংশ্লিষ্ট সাতমসজিদ হাউজিং এলাকা থেকে আরও ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-২।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত ৪টি দেশীয় ছুরি, ১টি স্টিলের হাতলযুক্ত কুঠার, ২টি স্টিলের তৈরি ছোরা, ১টি স্টিলের তৈরি হোল্ডিং চাকু, ১টি প্লাস্টিকের পিস্তল সদৃশ বস্তু, ৩টি মোবাইল এবং ৫০ পুরিয়া গাঁজা, ৬৫ পিস ইয়াবা ও ইয়াবা খাওয়ার সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন মো. নাঈম (১৪), মো. রুমান (১৮), মো. তামিম খাঁন (১৪), মো. সজীব (১৭), গ্যাং লিডার শরীফ ওরফে মোহন (১৮), মো. উদয় (১৯), মো. শাকিল (১৯), মো. নয়ন (১৮) ও মো. জাহিদ (১৮)।

র‌্যাব জানায়, সোমবার রাতে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যানে ছিনতাইয়ের শিকার হন এক দম্পতি। তারা র‌্যাব-২-এর কাছে অভিযোগ জানালে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দুটি টহল দল। এরপর রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থান এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন কিশোরসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ওই দম্পতির কাছ থেকে ছিনতাই করা মালামাল উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তার চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তার ‘ভাইব্বা ল কিং’ নামের একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই গ্যাংয়ের লিডারসহ আরো পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কমান্ডার খন্দাকার আল মঈন জানান, গ্রেপ্তাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জানিয়েছে, তারা দুই-তিন বছর ধরে এই গ্রুপটি পরিচালনা করছে এবং তাদের গ্রুপের সদস্যসংখ্যা ১৫-২০ জন। এই দলের নেতৃত্ব দেন মোহন। আগে এরা ‘হাই গ্যাং’ নামের আরেকটি কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে মোহন যুক্ত ছিল। পরে অন্তঃকোন্দলের কারণে তারা ৫-৬টি গ্রুপে ভাগ হয়ে যায়। যার একটি ‘ভাইব্বা ল কিং’।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও জানান, এই গ্যাংটি দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদপুর এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সন্ত্রাসী কার্যক্রম, চুরি-ডাকাতিসহ আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল। তারা ভাড়ায় বিভিন্ন স্থানে হুমকি ও মারপিটেও অংশ নিত। এছাড়া ইভ টিজিংসহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ছিল। তারা তাদের গ্যাং পরিচালনার জন্য টিকটক, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উদ্ধত্যপূর্ণ প্রচারণা করতো। যেমন: ‘মোহাম্মদপুরের পোলাপান যা করি তা টোকেন ছাড়াই ওপেন’, ‘মোহাম্মদপুরের পোলা বাজান, আমি একাই একশ, গ্যাঞ্জাম করার আগে ভাইব্বা লইয়্যে”।

র‌্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তাররা লেগুনা, অটোচালক, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণকর্মী ও অফিসের বার্তাবাহক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত ছিল। এমনকি তারা ছিনতাইয়ের উদ্দেশে বিভিন্ন ব্যাংকের আশপাশেও অবস্থান নিত এবং গ্রাহকদের টার্গেট করত। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানায় র‌্যাব।

Link copied!