শীতকালের জনপ্রিয় খাবার হলো হাঁসের মাংস। তবে বর্ষাকালের শেষেও এটি খাওয়া যায়। এটি খেলে শরীর উষ্ণ হয়ে ওঠে। তবে গ্রীষ্মে কেউ হাঁসের মাংস খায় না, এমন নয়। অনেকের পছন্দের খাবারের তালিকায় থাকে হাঁসের মাংস। শীত হোক বা গ্রীষ্ম, বছরজুড়ে ঝাল-মসলাদার হাঁসের মাংস খাওয়া হয়। যতই সুস্বাদু লাগুক না কেন, পুষ্টিবিদরা সতর্ক করেছেন, জিবের লাগাম টানতে হবে।
হাঁসের মাংসের পুষ্টিগুণ
হাঁসের মাংস সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এটি প্রোটিনের ভালো উৎস। এছাড়া ভিটামিন ও মিনারেলস রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে। তবে ফ্যাট ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি। প্রোটিন ছাড়াও শরীরের ক্যালরির প্রয়োজন আছে, যা শীতকালে বেশি দরকার। প্রতি ১০০ গ্রাম হাঁসের মাংস থেকে প্রায় ৩০০ ক্যালরি পাওয়া যায়। এছাড়া ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যেমন রিবোফ্লাবিন, নিয়াসিন, থায়ামিন, আয়রন, জিংক, ভিটামিন বি৬, ফসফরাস এবং ম্যাগনেশিয়ামও যথেষ্ট পরিমাণে থাকে।
হাঁসের মাংস থেকে দূরে থাকবেন যারা
হার্টের সমস্যা: স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকার কারণে রক্তে কোলেস্টেরল বাড়তে পারে। হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি থাকে।
ডায়াবেটিক রোগী: হাঁসের মাংসের উচ্চ ফ্যাট ইনসুলিনের কার্যকারিতা ব্যাহত করতে পারে। ডায়াবেটিস থাকলে কম খাওয়া উচিত।
উচ্চ কোলেস্টেরলের রোগী: হাঁসের চর্বি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়ায়, যা এথেরোসক্লেরোসিস বা ধমনির বন্ধ হওয়ার কারণ হতে পারে।
লিভারের সমস্যা থাকলে: লিভারজনিত সমস্যা থাকলে ফ্যাট বেশি থাকায় হাঁসের মাংস খাওয়া এড়ানো উচিত।
ওজন কমানোর ডায়েটে থাকা ব্যক্তিরা: হাঁসের মাংস ক্যালরি ও ফ্যাটে সমৃদ্ধ। ওজন কমাতে চেষ্টা করলে ক্ষতিকর হতে পারে।
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি সমস্যা থাকলে: অতিরিক্ত ফ্যাট হজমে সমস্যা করতে পারে।
পুষ্টিবিদেরা জানান, হাঁসের মাংস কোলেস্টেরল ও ফ্যাটে বেশি হলেও শরীর উষ্ণ করে। শীতকালে শরীর উষ্ণ রাখার জন্য, যদি কোনো অ্যালার্জি না থাকে, হাঁসের মাংস খাওয়া ভালো। রক্তস্বল্পতা বা খাবারে অনীহা থাকলে এটি শক্তির ভালো উৎস। তবে অ্যালার্জি থাকলে খাওয়া উচিত নয়। সাধারণত একজন মানুষকে ৬০-৭০ গ্রাম মাংস খাওয়ার কথা বলা হয়। হাঁসের মাংসের ক্ষেত্রেও ৩০ গ্রাম ১ টুকরা হিসেবে, ২ টুকরা খেলে ৬০ গ্রাম হয়, যা সুষম।
বাড়তি সতর্কতা
হাঁসের মাংস স্যাটুরেটেড ফ্যাটযুক্ত। চামড়াসহ হাঁসের মাংসে চর্বির পরিমাণ বেশি। রান্নার সময় চামড়া ফেলে দেওয়া ভালো। চামড়াসহ রান্না করলে পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। হাঁসের মাংস যেন ভালোভাবে সেদ্ধ হয়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঘনঘন বা অতিরিক্ত খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। নিজের শারীরিক অবস্থা ও সমস্যা বিবেচনা করে পরিমিত পরিমাণে খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।