• ঢাকা
  • শনিবার, ১১ মে, ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ৩ জ্বিলকদ ১৪৪৫

পরবর্তী মহামারী ঘটাতে পারে মশা, বিজ্ঞানীদের শঙ্কা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৩, ০৪:৫৫ পিএম
পরবর্তী মহামারী ঘটাতে পারে মশা, বিজ্ঞানীদের শঙ্কা

মশার কারণে মারাত্মক রোগ ছড়িয়ে পড়ার উদাহরণ কম নয়। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়ার কথা আমরা জানি। এসব রোগে মানুষ কমবেশি ভোগে, কিন্তু করোনার মতো এসব জীবাণু মহামারীর আকারে ছড়িয়ে পড়েনি। তবে বিজ্ঞানীদের শঙ্কা আগামী যে কোনো মহামারীর মূল খলনায়ক হবে মশা।

অ্যাডাম হেন্ডি ও তার টিম অ্যামাজন রেইন ফরেস্টে ফাঁদ পাতেন৷ তারা আসলে মশার পেছনে ধাওয়া করছেন। কারণ সেই মশা সম্ভবত এমন এক ভাইরাস বহন করতে পারে, যা আগামী মহামারীর কারণ হবে। সে ক্ষেত্রে ভাইরাস শিকারিরা সময় থাকতে সেই মশা শনাক্ত করতে চান। প্রথম দল হিসেবে তারাই প্রাণীর দেখা পেতে পারেন। তবে তার জন্য চাই অনেক ধৈর্য্য ও অধ্যাবসায়।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, গাছের মাথার উপর বিশেষ একধরনের বিপজ্জনক মশা বাস করে বলে জানা গেছে। অ্যাডাম ও তার টিম সেই মশাই ধরতে চান। অ্যাডাম ও তার টিম এমন মশার সন্ধান করছেন, যেগুলো ওয়েস্ট নাইল বা ডেঙ্গুর মতো তথাকথিত আরবোভাইরাস বহন করে। সেই ভাইরাস মেরুদণ্ডী প্রাণীর শরীরে বংশবৃদ্ধি করে এবং মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সেই মশার উপর নজরদারি চালানো অত্যন্ত কঠিন।

প্রায় ১০ হাজার হেক্টর এলাকা জুড়ে অপেক্ষাকৃত অক্ষত রিজার্ভ ফরেস্টে আরও একটি গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। প্রশ্ন হলো, জঙ্গলের গভীরের মশা কি বাইরের অংশের মশার তুলনায় ভিন্ন ভাইরাস বহন করে? সেই প্রশ্নের জবাব পাওয়া অত্যন্ত কঠিন।

অ্যাডাম হেন্ডি বলেন, “প্রথমে মশা ধরতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে, কারণ আগে এই প্রাণী সম্পর্কে বেশি গবেষণা হয়নি। সেই মশা ধরার বিষয়ে আমরা অনেক পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছি। সেই প্রক্রিয়ায় আমাদের অনেক কষ্ট হয়েছে।”

সত্যি বিপজ্জনক মশা ঠিক কোথায় বাস করে? অ্যাডামের অনুমান, গাছের একেবারে উপরের অংশের মশা মানুষের জন্য হুমকি বয়ে আনে। সেই ধারণা প্রমাণ করতে তিনি জঙ্গলের মাঝে দশ মিটার উঁচু রিসার্চ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছেন।

অ্যাডাম বলেন, “গাছের মাথার মশা মানুষের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক, কারণ সেই প্রাণী এমন প্যাথোজেন বহন করে, সাধারণত আমরা যেগুলোর সংস্পর্শে আসি না। আমাদের ইমিউন সিস্টেম সেই বিপদ  চেনে না।”

গাছের মাথায় যে প্রজাতির মশা বাস করে, সেই প্রাণী উষ্ণ ও শুকনো পরিবেশ পছন্দ করে। নীচে জঙ্গলের মাটির উপর অন্য প্রজাতির মশা দেখা যায়, যারা ছায়া ও শীতল পরিবেশে থাকতে চায়। কিন্তু বিপজ্জনক মশা কখন গাছের মগডাল থেকে নীচে নামে? সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে অ্যাডাম ও তার টিম বিভিন্ন স্তরে, বিভিন্ন জায়গায় মশা ধরছেন।

তিনি মনে করেন, “আমরা যখন জঙ্গলের ধারে গাছ কেটে ভবন অথবা সড়ক তৈরি করি, আমরা সেখানকার ‘মাইক্রোক্লাইমেট’ বদলে দেই। গাছের মগডালের নীচের পরিবেশ তখন গরম ও শুকনো হয়ে পড়ে। ছাউনির নীচে যে প্রজাতির মশা থাকে, তাদের সেটা পছন্দ। সে ক্ষেত্রে সেই প্রজাতি জমির আরও কাছাকাছি চলে আসে। তখন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের আশঙ্কাও বেড়ে যায়।”

ঘন জঙ্গলে মশার উপর নজরদারি হয়তো সম্ভব। কিন্তু রেইন ফরেস্টে গাছ কাটা কমানো আরও সহজ উপায়। কারণ প্রতিটি নতুন সড়ক হয়তো বিপজ্জনক মশা ডেকে আনছে।

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!