আগামী সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবে ফ্রান্স। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এ ঘোষণা দিয়েছেন। এর মাধ্যমে জি৭ ভুক্ত কোনো দেশের প্রথম স্বীকৃতি পাচ্ছে ফিলিস্তিন। বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে এক্সে এক পোস্টে মাখোঁ বলেছেন, নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতির ঘোষণা দেওয়া হবে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, আজকের জরুরি প্রয়োজন হলো গাজায় যুদ্ধের অবসান এবং বেসামরিক জনগণকে উদ্ধার করা। শান্তি সম্ভব। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, সমস্ত জিম্মির মুক্তি এবং গাজার জনগণের জন্য ব্যাপক মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা মাখোঁর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পরও এই পদক্ষেপ ‘সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত’ করে।
জি৭ হলো প্রধান শিল্পোন্নত দেশগুলোর একটি জোট। যার মধ্যে ফ্রান্সের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, জার্মানি, কানাডা ও জাপান রয়েছে।
মাখোঁ তার পোস্টে লিখেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ন্যায়সংগত ও স্থায়ী শান্তির প্রতি ঐতিহাসিক প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ফ্রান্স ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। আমাদের অবশ্যই হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজাকে সুরক্ষিত ও পুনর্নির্মাণের নিশ্চয়তা দিতে হবে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট আরও লেখেন, আমাদের ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হবে, এর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে যে ফিলিস্তিন নিরস্ত্রীকরণ পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং ইসরায়েলকে সম্পূর্ণরূপে স্বীকৃতি দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের সবার নিরাপত্তায় অবদান রাখে। এর কোনো বিকল্প নেই।
এদিকে নেতানিয়াহু এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, ৭ অক্টোবরের গণহত্যার পর তেল আবিবের পাশে ফিলিস্তিনিকে ম্যাক্রোঁর স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তে আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। এই পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ইসরায়েলকে ধ্বংস করার জন্য পদক্ষেপ।
গাজার স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ফ্রান্সের সিদ্ধান্তকে ‘সঠিক ও ইতিবাচক পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছে। একই সঙ্গে বিশ্বের সব দেশকে ‘ফ্রান্সের নেতৃত্ব অনুসরণ করার’ আহ্বান জানিয়েছে।
বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে ১৪০টির বেশি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। স্পেন, আয়ারল্যান্ডসহ কয়েকটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশও তাদের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলের প্রধান সমর্থক যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ মিত্ররা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়নি।