• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

সু চির এনএলডিসহ ৩৯ রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত ঘোষণা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৩, ১০:০৩ এএম
সু চির এনএলডিসহ ৩৯ রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত ঘোষণা

মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসিসহ (এনএলডি) ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে দেশটির সামরিক সরকার। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।

বুধবার মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, মিয়ানমারের সামরিক নির্বাচনী খসড়া আইনের আওতায় পুনরায় নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হওয়ায় সু চির দলসহ ৩৯টি দলকে বিলুপ্ত করার ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ২০১৫ ও ২০২০ সালের নির্বাচনে সেনা-সমর্থিত দলগুলোর বিরুদ্ধে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া এনএলডির আগামীকাল (বুধবার) থেকে ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল’ হয়ে যাবে।

২০২০ সালের নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতির মাধ্যমে এনএলডি ক্ষমতা আসে বলে সেনাবাহিনী দাবি করলেও কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। পরে এই অভিযোগে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চি নেতৃত্বাধীন সরকারকে হটিয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।

রাষ্ট্র পরিচালিত একটি টিভি বলেছে, ৬৩টি স্থানীয় বা জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত হয়েছে এবং ৪০টি দল মঙ্গলবারের মধ্যে নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে তারা বিলুপ্ত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মিয়ানমারে ১০ বছরের গণতান্ত্রিক সরকারের পথচলার অবসান ঘটে।

শান্তিতে নোবেলজয়ী ৭৭ বছর বয়সের সু চিকে বিভিন্ন মামলায় ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে সামরিক আদালতে। তার সমর্থকরা বলছেন, এসব মামলা ও সাজা তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে জান্তার দুরভিসন্ধি। নির্বাচনে বড় ধরনের কারচুপি ও জালিয়াতির অভিযোগ তুলে অভ্যুত্থানকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছে সামরিক বাহিনী। তবে স্বাধীন নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা বড় ধরনের কোনো অনিয়মের অভিযোগ তুলেননি।

মিয়ানমারে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছিল জুলাই মাসের শেষের দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনী রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বৃদ্ধি করে। এর ফলে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা মোতাবেক নির্বাচন আয়োজন পিছিয়ে যায়।

দেশটিতে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জান্তা সরকার, সেই নির্বাচনের আগে দলগুলোকে নিবন্ধনের আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু দেশটির বিরোধী রাজনীতিকরা বলেছেন, নির্বাচন অবাধ অথবা সুষ্ঠু হবে না।

সেনাবাহিনী বলছে, নির্বাচন আয়োজনের মতো নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। দেশটির বিশাল ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ সামরিক সরকারের হাতে নেই। এসব অঞ্চলে সশস্ত্র প্রতিরোধের মুখে পড়ছে জান্তা।

মিয়ানমারজুড়ে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ মোকাবেলায় প্রতিজ্ঞা করেছেন দেশটির সামরিক প্রধান মিন অং হাইং। সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর কাজকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ বলে বর্ণনা করেছেন তিনি। সোমবার রাজধানী নেপিদোয় সামরিক বাহিনীর বার্ষিকসশস্ত্র কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বিরল ভাষণে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

মিয়ানমারের স্থানীয় একটি পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীর মতে, অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সহিংসতায় ৩ হাজার ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া একই সময়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও ২০ হাজারের বেশি মানুষকে।

Link copied!