• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

সুদানে সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর লড়াইয়ে নিহত ২৭


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০২৩, ০৯:২২ এএম
সুদানে সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর লড়াইয়ে নিহত ২৭

সুদানের রাজধানীতে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির একটি শক্তিশালী আধা-সামরিক বাহিনীর মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ে ২৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে জাতিসংঘের তিন কর্মীও রয়েছেন।

শনিবার গভীর রাতে সুদানিজ ডক্টরস ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে বলেছে, সারা দেশে সংঘর্ষে অন্তত ২৭ জন নিহত এবং ২০০ জন আহত হয়েছেন।

রোববার (১৬ এপ্রিল) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই বাহিনীর লড়াই থেকে অবশ্য রাজধানী খার্তুমে বাসিন্দারা দূরে রয়েছেন এবং সুদানের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, রাষ্ট্রীয় টিভি ও সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর দখলে নিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে আধা-সামরিক বাহিনী।

নিহতদের মধ্যে জাতিসংঘের তিনজন কর্মী রয়েছেন। সামরিক বাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যরা একটি সামরিক ঘাঁটিতে গুলি বিনিময়ের সময় তারা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। সুদানের সামরিক নেতৃত্বের মধ্যে তীব্র ক্ষমতার দ্বন্দ্বই এ সংঘাতের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

সুদানের সেনাবাহিনী এবং তার বিরোধী আধা-সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) উভয়ই দাবি করেছে, তারা রাজধানী খার্তুমের বিমানবন্দর এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। যদিও এসব এলাকায় রাতভর লড়াই চলেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া দারফুর অঞ্চলের শহরগুলোসহ সুদানের অন্যত্রও সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।

খার্তুমের বাসিন্দারা বিবিসিকে তাদের আতঙ্ক ও ভয়ের কথা বর্ণনা করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় লড়াইয়ে উভয় পক্ষের যোদ্ধারা সাঁজোয়া যান এবং পিক-আপ ট্রাকে বসানো মেশিনগান থেকে গুলি চালায়। খার্তুমে কিছু ট্যাংক দেখা গেছে। সামরিক বাহিনী জানিয়েছে যে তারা রাজধানী এবং এর আশেপাশে আরএসএফ অবস্থানগুলোতে বিমান এবং ড্রোন থেকে আক্রমণ শুরু করেছে।

একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, তার পাশের বাড়িতে গুলি চালানো হয়েছে।

সুদানিজ ডক্টরস ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে বলেছে, সারা দেশে সংঘর্ষে অন্তত ২৭ জন নিহত এবং ২০০ জন আহত হয়েছে। হতাহতদের মধ্যে কতজন বেসামরিক নাগরিক তা জানা যায়নি। এর আগে, চিকিৎসকদের এই ইউনিয়নটি বলেছিল, সংঘাতে তিনজন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিবিসি বলছে, সুদানের পশ্চিমে কাবকাবিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে আরএসএফ এবং সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময়ের পর জাতিসংঘের সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) তিনজন কর্মচারী নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের এই সংস্থাটি দুর্বল সম্প্রদায়ের জন্য খাদ্য সহায়তা প্রদান করে থাকে।

এছাড়া এই ঘটনায় অন্য আরও দুই কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনার সময় বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির বেশ কিছু গাড়ি লুট করে আধা-সামরিক বাহিনী আরএসএফ।

সেনাবাহিনী বলেছে, বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান আরএসএফ’র ঘাঁটিতে আঘাত করছে। একইসঙ্গে শনিবার রাতে মানুষকে তাদের বাড়িতে থাকতে বলেছে দেশটির বিমান বাহিনী।

২০২১ সালে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এরপর থেকে সেনাবাহিনীর জেনারেলরা ‘স্বাধীন কাউন্সিলের’ নামে দেশ চালাচ্ছিলেন। এই স্বাধীন কাউন্সিলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হলেন জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো। অপরদিকে স্বাধীন কাউন্সিলের প্রধান হলেন জেনারেল আব্দেল ফাতাহ আল-বুরহান।

বেসামরিক সরকার গঠনের অংশ হিসেবে আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়েই সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। সেনাবাহিনী বলছে, আরএসএফকে দুই বছরের মধ্যে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করা হবে। কিন্তু আরএসএফ বলছে এই একীভূতকরণের প্রক্রিয়া যেন অন্তত ১০ বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরএসএফকে একীভূত করলে সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব কে দেবে এ নিয়েও দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে।

Link copied!