• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

গাজায় নিহত ছাড়াল ২০ হাজার, ১৪ হাজারই নারী ও শিশু


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২১, ২০২৩, ০৮:৩৭ এএম
গাজায় নিহত ছাড়াল ২০ হাজার, ১৪ হাজারই নারী ও শিশু
গাজার রাফাহ হাসপাতালের কাছে বিমান হামলা। ছবি : এপি ফটো/ফাতেমা সাবির

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের মধ্যে ১৪ হাজারেরও বেশি নারী ও শিশু। সবশেষ মিশরের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ গাজার রাফাহ হাসপাতালের কাছে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে নারী ও শিশুসহ অন্তত ১২ জন নিহত হওয়া ছাড়াও কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

এছাড়া আড়াই মাস ধরে চলা এই আগ্রাসনে গাজায় তিন লক্ষাধিক আবাসন ইউনিট ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু ও সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে বুধবার পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ২০ হাজার। যাদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। গাজায় দুই মাস ধরে চলা ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় প্রায় ৫০ হাজার আহত হয়েছে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত ৮ হাজার শিশু এবং ৬ হাজার ২০০ নারী রয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৩১০ জন চিকিৎসক, ৩৫ জন বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মী এবং ৯৭ জন সাংবাদিক রয়েছেন।

আড়াই মাস ধরে নিরলস ইসরায়েলি হামলা গাজা উপত্যকাজুড়ে প্রায় ৩ লাখ ৮ হাজার আবাসন ইউনিট ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলে অফিস জানিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ১১৪টি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছে এবং ২০০টি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া উপত্যকার চারটি গির্জাকেও হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

আগে হামাসশাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া পরিসংখ্যানের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছিল জাতিসংঘ। পরে ওই তথ্যকে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করে জাতিসংঘ।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় ১ হাজার ৪শ জন নিহত হয়েছে বলে ইসরায়েল প্রথমে জানিয়েছিল। এরপর নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ২শ বলে জানায় তারা। এখন হিসাব আরও সংশোধন করে তারা ওই হামলায় নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ১শ ৪৭ জন আর আহত ৮ হাজার ৭শ ৩০ বলে জানিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের বিশ্লেষক হেলেন ল্যাকনার আল-জাজিরাকে বলেছেন, ‘প্রতিটি ঘণ্টা পার হচ্ছে, তা আরও একটি ঘণ্টা যেখানে শত শত ফিলিস্তিনি বোমা হামলার শিকার ও নিহত হচ্ছে। প্রতিটি বিলম্বই একটি বিলম্ব, যা ইসরায়েলিদের তাদের নিরলস বোমাবর্ষণ চালিয়ে যেতে দেয়।’

যুদ্ধবন্ধে রেজুলিউশন পাস হলেও কার্যত কোনো ফল দেখছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবটি পাস হলেও, ইসরায়েলিরা এই জাতীয় পদক্ষেপগুলো উপেক্ষা করার একটি দীর্ঘ ইতিহাস পেয়েছে। সুতরাং আমি এই রেজুলশনটি পাস হলেও এর কোনো দ্রুত এবং গুরুতর ফলাফল দেখতে পাচ্ছি না।’

অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাস গোষ্ঠীকে ধ্বংস না করা পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ চালিয়ে যাবে ইসরায়েলি বাহিনী।

বুধবার এক ভিডিও বার্তায় এমন প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

সংবাদ সংস্থা আনাদুলু জানিয়েছে, নেতানিয়াহু বলেছেন, “আমরা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবো। হামাসকে নির্মূল না করে বিজয় না আনা পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকবে।”

এই বার্তা এমন এক সময় এসেছে, যখন গাজা উপত্যকায় দ্বিতীয় মানবিক বিরতির জন্য ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে একটি সম্ভাব্য চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে। জিম্মিদের ছাড়িয়ে নিতে হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের নতুন যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছে।

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাস নেতাদের কাছে মাত্র দুটি বিকল্প আছে ‘মৃত্যু অথবা আত্মসমর্পণ’। তবে নেতানিয়াহুর বক্তব্য নিয়ে হামাসের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

Link copied!