ফিলিস্তিনের গাজার একটি স্কুল, ক্যাফে ও ত্রাণকেন্দ্রসহ একাধিক স্থানে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
গাজা শহর ও উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় এসব হামলা চালানো হয়, যার মধ্যে শুধু আল-বাকা নামে এক সমুদ্র তীরবর্তী ক্যাফেতেই নিহত হন ৩৯ জন। সোমবার (৩০ জুন) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, আল-বাকা নামে উত্তর গাজার ওই সমুদ্র তীরবর্তী ক্যাফেটিতে নারী ও শিশুসহ অনেকেই জড়ো হয়েছিলেন একটি জন্মদিন উদযাপন করতে। সেখানে হওয়া হামলায় নিহতদের মধ্যে ইসমাইল আবু হাতাব নামে এক সাংবাদিকও রয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কোনো ধরনের পূর্বসতর্কতা ছাড়াই সেখানে যুদ্ধবিমান থেকে বোমা ফেলা হয়।
ইয়াহিয়া শরিফ নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “আমরা ছিন্নভিন্ন দেহ পড়ে থাকতে দেখেছি। এই জায়গার কোনো রাজনৈতিক বা সামরিক সংশ্লিষ্টতা ছিল না। শিশুদের জন্মদিন চলছিল এখানে।”
এদিকে গাজা শহরের ইয়াফা স্কুলে আশ্রয় নেওয়া কয়েকশ বাস্তুচ্যুত মানুষের ওপরও হামলা চালানো হয়। হামাদা আবু জারাদে নামের একজন জানান, তারা হামলার মাত্র পাঁচ মিনিট আগে সরে যাওয়ার নোটিশ পান। তিনি বলেন, “আমরা কোথায় যাবো বুঝতে পারছি না। গত ৬৩০ দিনেরও বেশি সময় ধরে আমরা কোনো সাহায্য পাইনি। প্রতিদিন মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছি।”
এ ছাড়া মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকার আল-আকসা শহীদ হাসপাতাল চত্বরে চালানো আরেক হামলায় আহত হন আরও অনেকে। সেখানে কয়েক হাজার পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল। হামলার সময় আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে বিশৃঙ্খলা। অনেকেই দৌঁড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
ইসরায়েলের এই হামলার শিকার অধিকাংশই ছিলেন ত্রাণের জন্য লাইনে দাঁড়ানো সাধারণ ফিলিস্তিনি। জিএইচএফ গত মে মাসের শেষ দিকে সীমিত পরিসরে গাজায় ত্রাণ বিতরণ শুরু করার পর থেকে এসব কেন্দ্রে প্রায় প্রতিদিনই প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। এখন পর্যন্ত এসব হামলায় অন্তত ৬০০ ফিলিস্তিনি নিহত ও ৪ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েলি পত্রিকা হারেৎজের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনাদের সরাসরি নিরস্ত্র ত্রাণপ্রার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে বলা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সেনা জানিয়েছেন, অনেক সময় কোনো হুমকি না থাকলেও ত্রাণপ্রার্থীদের ওপর অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ ও সহিংসতার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, “আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের ভেতরেই শরণার্থীদের জন্য স্থাপিত একটি তাঁবুতে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। আর এটি রোগী ও আশ্রয়প্রার্থীদের জীবনকে চরম ঝুঁকিতে ফেলেছে। এটি গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর পদ্ধতিগত ও পরিকল্পিত হামলার অংশ।”
 
                
              
 
																 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    





































