প্রায় পাঁচ কোটি শিশুকে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া শুরু হবে ১২ অক্টোবর থেকে। ইপিআইয়ের মাধ্যমে বিনা মূল্যে দেওয়া হবে এই টিকা। ৯ মাস বয়স থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু-কিশোররা এ টিকা পাবে। স্কুলে প্রথম ১০ দিন ক্যাম্প করে আর যারা স্কুলে যায় না তাদের পরবর্তী আট দিন কেন্দ্রে দেওয়া হবে এসব টিকা।
শিশু-কিশোরদের মারাত্মক রোগ টাইফয়েড জ্বর থেকে রক্ষায় দেশব্যাপী শুরু হচ্ছে টিকাদান কর্মসূচি। সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি-ইপিআই এর মাধ্যমে এ টিকা দেওয়া হবে। দরিদ্র দেশগুলোতে শিশুদের জীবন রক্ষাকারী টিকাদান কর্মসূচির আওতায়আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্যাভি, দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স এ কার্যক্রম পরিচালনা করে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর এস এম আব্দুল্লাহ আল মুরাদ বলেন, ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে কর্মসূচি। প্রায় ৫ কোটি বাচ্চাকে আমরা টিকা দিতে যাচ্ছি।
স্কুলে ক্যাম্প করে ১২ অক্টোবর থেকে প্রথম ১০ দিন টিকা দেওয়া হবে। আর স্কুলে না যাওয়া শিশুদের পরবর্তী ৮ দিন টিকা দেওয়া হবে কাছাকাছি কেন্দ্রে। টিকা পেতে সবাইকে নিবন্ধন করতে হবে। গ্যাভির অর্থায়নে বিশ্বের দশম দেশ হিসেবে এ টিকা পাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী বছর থেকে ইপিআইয়ের শিডিউলে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দেশে প্রতি লাখে ১৬১ জন শিশু টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর,ডায়রিয়া,মাথা ব্যথা এমনকি জটিলতা দেখা দিলে যকৃৎ ও প্লিহা বড় হয়ে জীবনহানিও হতে পারে। তাই সব শিশু-কিশোরকে টিকা নেওয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত, ঝুঁকিহীন এক ডোজের ইনজেকটেবল এই টিকা শিশু-কিশোরদের তিন থেকে সাত বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দেবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
রেজিস্ট্রেশন করবেন যেভাবে
টিকা পেতে হলে প্রতিটি শিশুকে প্রথমে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। নিচে ধাপে ধাপে নিবন্ধন প্রক্রিয়া বর্ণনা করা হলো—
https://vaxepi.gov.bd/registration/tcv- এ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নির্ধারিত তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।
রেজিস্ট্রেশনের জন্য ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে প্রথমে জন্মতারিখ দিতে হবে। দিন, মাস ও বছরের ঘর পূরণ করতে হবে। এরপর প্রয়োজন হবে ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন সনদ। জন্ম নিবন্ধন সনদের নম্বর ইংরেজিতে লিখতে হবে। কারও জন্ম নিবন্ধন সনদ না থাকলেও বাবা-মায়ের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেও নিবন্ধন করা যাবে।
এরপর নারী না পুরুষ ঘরটি পূরণ করতে হবে। তারপর একটি ক্যাপচা কোড পূরণের মাধ্যমে আবেদনকারীর সব তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে পরের ধাপে যাওয়া যাবে। পরের ধাপে গিয়ে আবেদনকারী মা-বাবার মোবাইল নম্বর, ই-মেইল, পাসপোর্ট নম্বর, বর্তমান ঠিকানার ঘর পূরণ করে ‘সাবমিট’ করতে হবে। ‘সাবমিট’ করার পর মোবাইল ফোনে আসা একটি ‘ওটিপি’ দেওয়ার মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ হবে।
দ্বিতীয় ধাপে টাইফয়েড অথবা মেনিনজাইটিসের মধ্য থেকে একটি বাছাই করতে হবে। টাইফয়েড অংশে ক্লিক করলে দুটি অপশন আসবে- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত নবম শ্রেণি ও সমমান পর্যন্ত সব শিক্ষার্থী অথবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সব শিশু।
এখান থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অপশনে গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম, পুরো ঠিকানা, কোন শ্রেণিতে অধ্যয়নরত তা পূরণ করতে হবে। এরপর সাবমিট করলে টিকাদান কেন্দ্রের তথ্য আসবে। যে স্কুলে শিক্ষার্থী টিকা নিতে চায়, সেটা সিলেক্ট করতে হবে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত অপশনে গেলেও নিকটস্থ টিকাদান কেন্দ্র বাছাই করে নিতে হবে। এরপর ‘সাবমিট’ করতে হবে। সাবমিট করার পর ভ্যাকসিন কার্ড আসবে। সেখানে ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। এ কার্ড নিয়ে নির্ধারিত দিনে টিকাদান কেন্দ্রে যেতে হবে।