• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩০, ১২ শা'বান ১৪৪৬

করোনামুক্তির পর দেখা দেয় দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য জটিলতা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২১, ১২:০৭ পিএম
করোনামুক্তির পর দেখা দেয় দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য জটিলতা

বেড়েই চলেছে করোনার সংক্রমণ। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে অনেকে সুস্থও হয়েছেন। অল্প উপসর্গ নিয়ে বাড়িতে চিকিৎসায় অনেকে সুস্থ হয়েছে। অনেকে আবার হাসপাতালের দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু এতেই রেহাই নেই। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুস্থ হয়েও বেশ কিছু দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছেন করোনা সংক্রমিত রোগীরা।

কোভিড-পরবর্তী এই সমস্যাকে পোস্ট কোভিড সিনড্রোম বা লং কোভিড হিসেবে আখ্যায়িত করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনা ইউনিটে দায়িত্বে রয়েছেন চিকিৎসক সাজ্জাদ হোসেন। করোনা রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য জটিলতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “পোস্ট কোভিড সিনড্রোমে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। এদের মধ্যে কারও কারও অবস্থা আরও জটিল হয়ে পড়ছে। সুস্থ হওয়াদের অনেকেই চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হচ্ছেন নানা জটিলতা নিয়ে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে।“

সম্প্রতি সুস্থ হওয়া ব্যক্তিদের অনেকই হাসপাতালের শরণাপন্ন হচ্ছেন শারীরিক সমস্যা নিয়ে। এদের মধ্যে যারা ভেন্টিলেটারে ছিলেন, তাদের শারীরিক ও মানসিক দুই দিকেই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এসব সমস্য়া আবার দীর্ঘমেয়াদি হচ্ছে। বলা যায় নীরব ঘাতক, যা ভেতরে ভেতরে শরীরকে দুর্বল করে দিচ্ছে।

চিকিৎসক সাজ্জাদ হোসেন জানান, করোনা থেকে সুস্থ হওয়া ব্যক্তিরা মূলত কয়েকটি সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এগুলো মধ্যে রয়েছে কোভিড নিউমোনিয়া, হাইপারটেনশন, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন, নিউরোজিক্যাল সমস্যা, হৃদরোগ, লিভারের ক্ষতি, কিডনিতে সংক্রমণ।

চিকিৎসক আরও জানান, “সুস্থ হওয়া ব্যক্তিরা শারীরিক জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে আসছেন। তাদের শরীরের  বিভিন্ন পরীক্ষা করে দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্ত অবস্থায় যাদের ফুসফুসের ১০-১২ শতাংশ সংক্রমিত ছিল, সুস্থ হয়ে আবারও অসুস্থ হওয়া কয়েকজন ব্যক্তির ফুসফুস ৭০ শতাংশই কাজ করা বন্ধ করে দেয়।”

এই ধরনের সমস্যার কারণ সম্পর্কে চিকিৎসক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “করোনায় আক্রান্ত হলে ফুসফুস ছোট হয়ে যায়। যথাযথ চিকিৎসা না হলে বা নিয়মিত চেকআপে না থাকলে ফুসফুসের অবস্থা বোঝা যায় না। পরে সুস্থ হওয়ার পরও জটিলতা দেখা দেয়, যা দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ী হয়।”

“করোনার পরে ফাঙ্গাল ও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন বহুমাত্রিক জটিলতা করে। ডায়াবেটিস রোগীদের শারীরিক সমস্যা বেশি হয়। হার্ট, লিভার ও কিডনিজনিত জটিলতা থেকে যায়।”

একই কথা বলেছেন কানাডাভিত্তিক চিকিৎসক এবং সেন্টার ফর রিসার্চ, ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাকশনের ডা. শাহরিয়ার রোজেন। তিনি বলছেন, “পোস্ট লং কোভিড সিনড্রোম এখন দেশে বয়স্কদের পাশাপাশি তরুণদের মধ্যেও দেখা গেছে। এ ক্ষেত্রে ফুসফুসের সমস্যাগুলোই বেশি হয়। দীর্ঘমেয়াদি কাশি থেকে যাচ্ছে। নিশ্বাসেও সমস্যা থেকে যায়। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তরা শরীরে শক্তি পাচ্ছে না, মস্তিষ্কে সমস্যা হয়। এমনকি ডায়াবেটিস বা হাইপারটেনশনের মতো কঠিন রোগে আক্রান্তও হচ্ছে। অনেকের রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছে। স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের মতো ঝুঁকিও বাড়ছে।”

করোনা টিকা গ্রহণের পরও লং কোভিড সিনড্রোম হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায় বলেও জানান ডা. শাহরিয়ার রোজেন।

 

সূত্র: বিবিসি

Link copied!