যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর পর শোনা গিয়েছিল, অভিমান থেকে দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তৌকীর ও বিপাশা। তবে এ নিয়ে কখনোই কথা বলেননি দুজনের কেউ। সম্প্রতি এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তৌকীর কথা বললেন সেই প্রসঙ্গে। জানালেন, মূলত সন্তানদের পড়াশোনার কথা চিন্তা করেই যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তারা। তবে অভিমানের কথাটাও অস্বীকার করেননি অভিনেতা।
তৌকীর বলেন, ‘শিল্পীরা তো অভিমানী। সব শিল্পীই মনে করেন, তার সঠিক মূল্যায়ন হলো না। তবে আমাদের দেশের বাইরে যাওয়ার মূল কারণ হলো বাচ্চাদের বেটার এডুকেশনের চেষ্টা করা।’
যুক্তরাষ্ট্রে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া প্রথমে চ্যালেঞ্জিং হলেও বিষয়টি জীবনের অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখেন তৌকীর আহমেদ। অভিনেতা বলেন, ‘নির্বাসনও কিন্তু একটা অভিজ্ঞতা। হোক সেটা স্বেচ্ছা নির্বাসন। আমার ধারণা, এটা আমার জীবনের বড় একটা অভিজ্ঞতা। বিদেশে না থাকলে আমি হয়তো বুঝতাম না, নির্বাসনে পাবলো নেরুদা কী ফিল করেছেন। আন্দ্রেই তারকোভস্কি কেন তার গ্রামের জন্য কেঁদেছিলেন। এমনকি ইঙ্গমার বার্গম্যানকে কেন সুইডেন ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে আসতে হয়েছিল। নির্বাসন বা স্থানান্তর একটি ইন্টারেস্টিং বিষয়। কেননা স্থানান্তরিত হওয়ার পর আবার শূন্য থেকে শুরু করতে হয়। শূন্য থেকে শুরুর একটা চ্যালেঞ্জ থাকে, একটা ভয় থাকে। আবার এক্সপ্লোরেশনের অসম্ভব সুন্দর একটা আনন্দ থাকে।’
বিদেশে বেশির ভাগ সময় পড়াশোনা ও লেখালেখি করেই কাটে বলে জানান তৌকীর। তিনি বলেন, ‘আমি এখন আর্লি রিটায়ারমেন্টের দিকে আছি। আর্লি রিটায়ারমেন্ট বলতে আমি অ্যাকটিভ প্রফেশন থেকে দূরে আছি, কিন্তু ক্রিয়েটিভ প্রফেশনকে ধরে রেখেছি। সেখানে আমি প্রচুর পড়ার সময় পাই, লেখার সময় পাই, সিনেমা দেখার সুযোগ পাই, বেড়ানোর সময় পাই। যেগুলো আমি আর বিপাশা খুব উপভোগ করি।’
বিদেশে স্থায়ী হলেও সময়-সুযোগ পেলে দেশে আসেন তৌকীর আহমেদ। চেষ্টা করেন পছন্দমতো কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার। সম্প্রতি তিনি বানিয়েছেন ‘ধূসর প্রজাপ্রতি’ নামের ধারাবাহিক নাটক। গত মাস থেকে বিটিভিতে প্রচারিত হচ্ছে ধারাবাহিকটি। সর্বশেষ ২০২১ সালে তৌকীর আহমেদ পরিচালনা করেছিলেন ‘স্ফুলিঙ্গ’ নামের সিনেমা। মাঝে মঞ্চে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন মঞ্চনাটক ‘তীর্থযাত্রী’। এদিকে সংসারের ব্যস্ততার পাশাপাশি বিপাশার ব্যস্ততা ছবি আঁকা নিয়ে। এ বছরই ‘দ্য আর্ট ডোম’ নামের আন্তর্জাতিক শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বিপাশা।