দেশের বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছাঁটাই আতঙ্কে ভুগছেন। এ ক্ষেত্রে নানা কৌশল নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। এরই মধ্যে চাকরি হারিয়ে দিশেহারা আল-আরাফাহ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামীসহ কিছু ব্যাংকের কয়েক শ কর্মী। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, অন্যায়ভাবে কাউকে চাকরিচ্যুত করা হলে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আওয়ামী আমলে রাজনৈতিক বিবেচনায় বেশ কয়েকটি ব্যাংক চালু হয়। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে, অনেক ব্যাংকই নামে বেনামে ঋণ বিতরণ এবং ইচ্ছেমতো জনবল নিয়োগ দেয়। তবে পটপরিবর্তনের পর কর্মী ছাঁটাই করছে কিছু ব্যাংকের নতুন পরিচালনা পর্ষদ।
ছাঁটাইয়ের আতঙ্কে অনেক ব্যাংকেই অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। আন্দোলন করেও চাকরি ফেরত পাননি আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৫০০ কর্মকর্তা। কোনো নোটিশ ছাড়াই ছাঁটাইয়ের অভিযোগ তাদের।
একজন ভুক্তভোগী বলেন, ‘যদি আপনি আমাকে অবৈধ নিয়োগ বলে টার্মিনেট করেন, তাহলে আপনার পুরো অথরিটিকেই টার্মিনেট করতে হবে। কেননা, আমার ওই নিয়োগের সাথে আপনি সম্পৃক্ত ছিলেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পৃক্ত ছিল।’
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০২১ সাল থেকে ব্যাংকের নিয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্যে বেশ কিছু অনিয়ম রয়েছে। নতুন পর্ষদ যাচাই-বাছাই করে অযোগ্যদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করেছে। এ ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হয়েছে বলেও দাবি ব্যাংকগুলোর।
আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ডেপুটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ‘যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়োগ হয়নি বলেই তারা বলেছেন। এই যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে তাদের রেগুলাইজ করার জন্যই কিন্তু পরীক্ষাটা নেওয়া হয়েছে। এতে ৮০০ জনের মতো উত্তীর্ণ হয়েছে, বাকিরা অনুত্তীর্ণ হওয়ার প্রেক্ষিতে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, নিয়োগ ও ছাঁটাইয়ের অনিয়ম হলে ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘কোনো একটা ব্যাংকে গণ ছাঁটাইয়ের কারণে গণ অসন্তোষ দেখা দিয়েছে, যেটা পুরো ব্যাংকিং সেক্টরেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, প্রকারান্তরে এটা সরকারকেও বিব্রত করতে পারে, এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংক হস্তক্ষেপ করবে।’