প্রিয়দর্শিনী শব্দটি উচ্চারিত হতেই যার নাম চলে আসে, তিনি দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমী। পুরো নাম আরিফা পারভিন জামান মৌসুমী। বাংলা চলচ্চিত্রে খুব অল্প সময়ে দর্শকের হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। আর এই গুণী অভিনেত্রীর জন্মদিন।
১৯৭৩ সালের আজকের এই দিনে খুলনায় জন্ম হয় মৌসুমীর। ছোটবেলা থেকেই একজন অভিনেত্রী এবং গায়িকা হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু হয়। এরপর তিনি ‘আনন্দ বিচিত্রা ফটো বিউটি কনটেস্ট’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন, যার ওপর ভিত্তি করে ১৯৯০ সালে টেলিভিশনের বাণিজ্যিক ধারার বিভিন্ন অনুষ্ঠান নিয়ে হাজির হন মৌসুমী।
১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় মৌসুমীর। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। একে একে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য দর্শকনন্দিত সিনেমা। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘দেনমোহর,’ ‘মেঘলা আকাশ,’ ‘মোল্লাবাড়ির বউ,’ ‘দেবদাস’। এখন পর্যন্ত তিনি অভিনয় করেছেন শতাধিক সিনেমায়।

দুই যুগের বেশি সময় ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন মৌসুমী। অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালকের খাতায় লিখিয়েছেন নাম। ২০০৩ সালে ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ দিয়ে তার চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে। পরে ২০০৫ সালে পরিচালনা করেন ‘মেহের নিগার’।

১৯৯৬ সালে ‘গরিবের রানী’ ছায়াছবি দিয়ে প্রযোজক হিসেবে সামনে আসেন মৌসুমী। চলচ্চিত্র প্রযোজনার লক্ষ্যে তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কপোতাক্ষ চলচ্চিত্র প্রতিষ্ঠা করেন। মুশফিকুর রহমান গুলজারের পরিচালনায় ‘সুখের ঘরে দুখের আগুন’ ও মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালনায় ‘বউয়ের সম্মান’ সিনেমা প্রযোজনা করেন এই অভিনেত্রী।

চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি টেলিভিশন নাটক ও টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন। সেই সঙ্গে নাম লিখিয়েছেন উপস্থাপনায়ও। ২০১৬ সালে চিত্রগ্রাহক জেড এইচ মিন্টুর নির্দেশনায় ‘মেঘের আড়ালে’ টেলিফিল্মে অভিনয় করেন তিনি।
সুরের জাদু দিয়েও দর্শকের মন জয় করেছেন মৌসুমী। ২০০৪ সালে জাহিদ হোসেন পরিচালিত ‘মাতৃত্ব’ ছায়াছবিতে একটি গানে কণ্ঠ দেন তিনি। ২০১৪ সালে মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত তারকাঁটা ছায়াছবিতে ‘কী যে শূন্য লাগে তুমিহীনা’ গানে কণ্ঠ দেন সাড়া জাগিয়েছিলেন তিনি।

জনপ্রিয় এ অভিনেত্রীর ঝুলিতে রয়েছে অসংখ্য পুরস্কার। তার অভিনীত ‘মেঘলা আকাশ’, ‘তারকাঁটা’ এবং ‘দেবদাস’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এ ছাড়া বাচসাস পুরস্কার পেয়েছেন ৬ বার, পেয়েছেন মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার।