• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অস্কার মঞ্চের আড়ালে থাকা বাঙালি তরুণী সঞ্চারী


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২৩, ০৩:২৩ পিএম
অস্কার মঞ্চের আড়ালে থাকা বাঙালি তরুণী সঞ্চারী

এবারের অস্কারে সেরা তথ্যচিত্র হিসেবে ভারতের ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’ পুরস্কৃত হয়েছে। এর প্রযোজক গুনিত মোঙ্গা ও পরিচালক কার্তিকি গঞ্জালভেস লস অ্যাঞ্জেলসের আলো ঝলমলে মঞ্চে পুরস্কার গ্রহণ করেন। কিন্তু এ ছবির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এক বাঙালি তরুণী ছিলেন নেপথ্যে। তার নাম সঞ্চারী দাস মল্লিক। তথ্যচিত্রটি কয়েকজন মিলে সম্পাদনা করেছেন। তাদের একজন দক্ষিণ কলকাতার গলফগ্রিনের এই তরুণী। এই প্রথম কোনো তথ্যচিত্রে কাজ করলেন মুম্বাইয়ে থাকা সঞ্চারী।

কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা শুরু সঞ্চারীর। পরে ঝোঁকেন ম্যাস কমিউনিকেশনের দিকে। তার পড়াশোনা সেন্ট জেভিয়ার্সে। এই সূত্রে ছবির জগতের সঙ্গে যোগাযোগ সঞ্চারীর। নিজের ক্যারিয়ারের শুরুতেই অনবদ্য সাফল্যের মুখ দেখলেন তিনি।

পাঁচ বছর ধরে শুটিং হয়েছে তামিল এই তথ্যচিত্রের। ৫০০ ঘণ্টা থেকে সম্পাদনার পর তা দর্শকের কাছে পৌঁছেছে ৪০ মিনিট। অত্যন্ত কঠিন এই কাজ সম্পন্ন করেছেন প্রধান সম্পাদক সঞ্চারী ও তার সহযোগীরা।

তথ্যচিত্র অস্কার জেতায় সঞ্চারীর প্রতিক্রিয়া সামান্যই। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, “অসাধারণ মুহূর্ত। এই কৃতিত্ব ইউনিটের সকলের।”

সঞ্চারীর সাফল্যের ভিত্তি আছে তার পরিবারে। ঠাকুরদা মনোজেন্দু ছিলেন ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। এই প্রতিষ্ঠান সত্যজিৎ রায়ের হাতে তৈরি বলা চলে। ১৯৯২ সালে জীবনকীর্তির জন্য অস্কার পেয়েছিলেন ‘পথের পাঁচালীর’ স্রষ্টা। তার তিন দশক পর বাঙালি মেয়ে সঞ্চারীর সাফল্যে যেন ইতিহাসের প্রত্যাবর্তন।

সঞ্চারীর মূল অনুপ্রেরণা তার মা শুভা দাস মল্লিক নিজেও তথ্যচিত্র নির্মাতা। চলচ্চিত্রবিদ্যার অধ্যাপনা করেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, “প্রথম তথ্যচিত্রে এটা আশাতীত সাফল্য। প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি। এর নেপথ্যে মেয়ের ভূমিকা আছে বলে ভালো লাগছে। ভারতীয় তথ্যচিত্র বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কার জিতেছে, এটা এ দেশের তথ্যচিত্র নির্মাতাদের আগ্রহী করবে!”

পরিবারের ইচ্ছায় কম্পিউটার সায়েন্স পড়তে হয়েছিল সঞ্চারীকে। শুভা বলেন, “ওর ভাল লাগছিল না কম্পিউটার নিয়ে পড়তে। সেটা দেখে আমরা স্ট্রিম পাল্টে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। ম্যাস কমিউনিকেশনে ভর্তি করি। সেটা ঠিক সিদ্ধান্ত ছিল, এখন বুঝতে পারি।”

জেভিয়ার্সে সঞ্চারীর শিক্ষক গোপালন মল্লিক এই সাফল্যে আপ্লুত। তিনি বলেন, “এত কম বয়সে এই সম্মান পেয়েছে যা অভাবনীয়। প্রযোজক-পরিচালকের সঙ্গে সঞ্চারীর এই স্বীকৃতি নারী ক্ষমতায়নের দিকটিও উজ্জ্বল করেছে।”

Link copied!