• ঢাকা
  • বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২, ২৩ রবিউস সানি ১৪৪৭

রিপন মিয়াকে নিয়ে বিস্ফোরক স্ট্যাটাস মীর লোকমানের


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২৫, ১২:৫০ পিএম
রিপন মিয়াকে নিয়ে বিস্ফোরক স্ট্যাটাস মীর লোকমানের
ছবি : সংগৃহীত

জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়া। তিনি ‘রিপন ভিডিও’ নামেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিত। সহজ-সরল জীবনযাপন, চিন্তামুক্তভাবে ঘুরে বেড়ানো ও ছন্দাকারে বাস্তবধর্মী বিভিন্ন কথাবার্তার কারণে খুব অল্প সময়েই ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন রিপন। তবে সম্প্রতি তাকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, তিনি অনলাইনে কনটেন্ট তৈরি করে স্বাবলম্বী হলেও তার বাবা-মায়ের খোঁজখবর নেন না।

এরই মাঝে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইম অ্যাকশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মূকাভিনেতা মীর লোকমান রিপন মিয়া সংশ্লিষ্ট একটি ঘটনার স্মৃতিচারণা করেছেন। তিনি ২০২০ সালে রিপনকে মূকাভিনয় শেখানোর জন্য নিজ খরচে ঢাকায় এনেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম অ্যাকশনের অফিসে তাকে কয়েক দিন মূকাভিনয় শেখান তিনি। তখন ঢাবির অন্যান্য নারী শিক্ষার্থীও অভিনয়ের ক্লাস করতেন।

এ সময় নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধারণ করা বিভিন্ন ছবি-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে আপত্তিকর ক্যাপশন দিয়ে তাদেরকে হেনস্তার অভিযোগ তোলেন মীর লোকমান। তিনি জানান, তখন এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখতে মীর লোকমান পুলিশের সহায়তা নিয়েছিলেন। 

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে মীর লোকমান রিপন মিয়ার ব্যাপারে তিক্ত অভিজ্ঞতার ব্যাপারে জানান।

রিপনকে নিয়ে মীর লোকমানের ফেসবুক স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:

রিপন মিয়ারে নিয়া কয়েকটা কথা...। গত কয়েক দিন ধরে তারে নিয়ে মিডিয়ায় খুব হাইপ। প্রায় সবগুলো জাতীয় সংবাদমাধ্যম তাকে নিয়ে নিউজ করেছে। তার একেকটি বাক্য যেন রীতিমতো মনীষীদের বাণী চিরন্তনীর মতো প্রকাশ করছে।

প্রথম আলোতে তার নিউজ দেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মুমিত আল রশিদ স্যার আমাকে কল দিয়ে বলেন- ‘লোকমান, গেছে, সব গেছে। এর মতো লোকরে নিয়ে শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ মিডিয়ারও এমন বিরাট আয়োজন!’

আসল কথায় আসি। সত্যি বলতে এর (রিপন) মতো ইতর খুব কমই দেখেছি আমি। ২০২০ সালের দিকে করোনার সময়ে রিপন মিয়া আসলে ওরকম গণনাযোগ্য কেউ ছিল না। ফেসবুকে তার সরল মনের ছন্দ মিলিয়ে কথা বলা দেখে যোগাযোগ করে ঢাকায় নিয়ে আসি। আমার বাসাতেই ওঠে। ওর আসা-যাওয়াসহ যাবতীয় খরচও আমি দিই। আমার মূকাভিনয়ের ক্লাসের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে তাকে ক্লাস করার সুযোগ দেয়া হয়। উদ্দেশ্য ছিল, অনলাইনে তার হঠাৎ করে পরিচিতি পেয়ে যাওয়াটা যেন ইতিবাচকভাবে মূলধারার লোকজন কাজে লাগায়। এবং পড়াশোনা না জানা ছেলেটা যেন সত্যিকার অর্থেই বুঝজ্ঞান সম্পন্ন হয়, শহুরে সমাজের মিডিয়ার কাজের ধারার সাথে সে যেন মিশতে পারে, যেহেতু সে তা চায়।

রিপন মিয়া

হাতিরপুলে আমার ফ্লোরে সে ক্লাসে অংশ নেয় দুইদিন। তিন নাম্বার দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আসে। ক্লাসের বাকি শিক্ষার্থীরাসহ সবাই মিলে যার যার ক্যাপাসিটিকে কাজে লাগিয়ে গ্রুপ ভিডিও শ্যুট হচ্ছিল। বাকি ছেলে মেয়েরা তাকে ক্যাম্পাস ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিল।

কয়েক দিন ক্লাস করে সে তার বাড়ি চলে যায়। এরপর থেকে তার জঘন্য কার্যকলাপ শুরু হয়। একসাথে থাকা আমাদের মেয়েদের ছবি ব্যবহার করে সে ফেসবুকে লিখতে থাকে- ‘আমার গার্লফ্রেন্ড, আমি এম রোকেয়া হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা আমার পিছে পিছে ঘুরে কিন্তু আমি পাত্তা দিই না।’ তার এই কার্যকলাপ দেখে একজন মেয়ে রীতিমতো অসুস্থ হয়ে পড়ে।

আমি তাকে কল দিয়ে অনেকবার অনুরোধ করি যে, ‘এসব ছবি ও লেখা ডিলিট করে দেন। আমি আপনাকে একটু হলেও শিখিয়েছি, মানে আপনার শিক্ষক।’ এরপর থেকে সে আমার ফোন আর রিসিভ করেনি। উল্টা আরও বাজে বাজে পোস্ট দিয়ে গেছে একজন মেয়ের ছবি ব্যবহার করে।

আমি বাধ্য হয়ে মুমিত স্যারে সহযোগিতা নিই। উনি আমাকে খুব বকাঝকা করেন, না বুঝে কেন তারে আনলাম। এরপর ময়মনসিংহের প্রথম আলোর প্রতিনিধির সহযোগিতায় থানায় ডেকে নেওয়া হয় তাকে। পুলিশ তাকে বাধ্য করে সব পোস্ট ডিলিট করতে, একই সাথে আমাদের মেয়েদের সব ছবি তার মোবাইল থেকে ডিলিট করা হয়। তাকে সারা দিন থানায় আটকে রেখে সন্ধ্যায় ছাড়া হয়। এক সপ্তাহ পর তার মোবাইল থানা থেকে ফেরত দেওয়া হয়।

এর মধ্যে অনেক বড় বড় ইউটিবার তাকে ব্যবহার করেছে, যা দেখেছি। সে খুব পরিমাণে ভাইরাল বয় হয়ে ওঠেছে। ঐ রিপনকে দেখলাম কয়েকদিন ধরে মহানপুরুষ বানানো হয়েছে, তার চতুর সব কথাবার্তার জন্য!

গত দুই দিন ধরে তারে নিয়ে দেখছি আবার বিপরীত কিছু লেখা হচ্ছে, সেটাও মিডিয়াতেই। সে নাকি বাবা মাকে দেখে না, বউ সন্তানকে অস্বীকার করে। আরও কত কী!

বিনোদন বিভাগের আরো খবর

Link copied!