লোকসংগীতের বরেণ্যশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই। শনিবার রাত ১০টা ১৫ মিনিটে তিনি মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন তার মেয়ে জিহান ফারিহা।
শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় ফরিদা পারভীনের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। পরে কুষ্টিয়ায় মা-বাবার কবরে তাকে দাফন করা হবে।
রাতে হাসপাতালে গণমাধ্যমের সামনে এসব তথ্য জানান শিল্পীর স্বামী প্রখ্যাত বংশীবাদক ওস্তাদ গাজী আব্দুল হাকিম।
ওস্তাদ গাজী আব্দুল হাকিম সাংবাদিকদের জানান, সকালে ‘অচিন পাখি’ নামে গানের স্কুলে শিল্পীকে নেওয়া হবে। এরপর সকাল ৯টায় তেজকুনি পাড়া মসজিদে শিল্পীর প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরো বলেন, শিল্পী, কলাকুশলীসহ সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শিল্পীর মরদেহ সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। সেখানে শ্রদ্ধা জানানো শেষে বেলা সাড়ে ১১টায় শিল্পীর মরদেহ নেওয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে।
সেখানে আরেকটি নামাজে জানাজা হবে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে মরদেহ কুষ্টিয়াতে নেওয়া হবে। সেখানকার পৌর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরে ফরিদা পারভীনকে দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য, লালনের গানের বাণী ও সুরকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে ফরিদা পারভীনের অবদান সর্বজনস্বীকৃত।
দেশের পাশাপাশি বিশ্বদরবারেও তিনি লালন সাঁইয়ের বাণী ও সুরের প্রচারে কাজ করে গেছেন। জাপান, সুইডেন, ডেনমার্ক, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বহু দেশে লালনসংগীত পরিবেশন করেছেন।
লালনসংগীতে অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের একুশে পদক পান ফরিদা পারভীন। ১৯৯৩ সালে ‘অন্ধ প্রেম’ সিনেমার ‘নিন্দার কাঁটা’ গানটির জন্য শ্রেষ্ঠ সংগীতশিল্পী (নারী) হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০০৮ সালে তিনি জাপানের ফুকুওয়াকা পুরস্কার লাভ করেন।
লালনশিল্পী হিসেবে সুপরিচিত হলেও, তাঁর কণ্ঠে বেশ কিছু আধুনিক ও দেশের গান জনপ্রিয় হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘তোমরা ভুলে গেছ মল্লিকাদির নাম’, ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’ ইত্যাদি।