হিরো আলম নামটির সঙ্গে কমবেশি সবারই পরিচয় আছে। উদ্ভট সব কাজের জন্য মাঝেমধ্যেই সমালোচনায় থাকেন তিনি। কিছুদিন আগে বিকৃত করে রবীন্দ্রসংগীত গাওয়ার জন্য আবারও আলোচনায় আসেন আলম।
এবার রীতিমতো মুচলেকা দিয়ে গান বন্ধের কথা জানালেন হিরো আলম। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছে মুচলেকা দিয়ে হিরো আলম জানিয়েছেন, জীবনেও আর বিকৃত করে নজরুল ও রবীন্দ্র সংগীত গাইবেন না।
বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য জানান।
এ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, “হিরো আলমের বিরুদ্ধে ডিবির সাইবার আ্যন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগে অনেকগুলো অভিযোগ জমা হয়েছিল। সেগুলোর বিষয়ে আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাকে ডাকা হয়েছিল। সে মুচলেকা দিয়েছে, জীবনেও আর নজরুল ও রবিন্দ্র সংগীত বিকৃত করে গাইবেন না, এধরনের ভিডিও বানাবে না।”
হারুন অর রশীদ আরও বলেন, “আমাদের বাঙ্গালি সংস্কৃতির অহংকার নজরুল ও রবীন্দ্রসংগীত। আমরা গান শুনি, নজরুল, রবীন্দ্র শুনি, এইসব গানের সে সব কিছু পরিবর্তন করেছে। এসব কেন করে জানতে চাইলে সে জানিয়েছে, সে জীবনেও আর এমন গান করবে না, সে মুচলেকা দিয়েছে।”
গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান আরও বলেন, “পরবর্তীতে তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সে বিভিন্ন সময় পুলিশের বিভিন্ন ডিআইজি-এসপির পোশাক পরে কনস্টেবলের অভিনয় করছে। আবার কনস্টেবলের ড্রেস পরে বিভিন্ন পদ মর্যাদার চরিত্রে অভিনয় করেছে। এসব পোশাক পরতে পূর্ব-অনুমতি নেয়া প্রয়োজন, কিন্তু সে নেয় না। এমনকি সে শিল্পী সমিতির সদস্যও না। এসব ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলে পোশাকের বিষয়েও সে মুচলেকা দিয়েছে। সে মুচলেকা বলেছে, এ ধরনের কোনো কাজ বা ভিডিও আর করবে না।”
এ প্রসঙ্গে হিরো আলম জানান, অর্থ রোজগারের জন্যই মূলত সে বিভিন্ন ভাইরাল ইস্যুকেন্দ্রিক কন্টেন্ট তৈরি করে থাকে। গুণগত মানের চেয়ে সে বেশি ভিউ এবং বেশি উপার্জনের লক্ষ্যে কন্টেন্ট নির্মাণ করে থাকে। এছাড়াও তার কন্টেন্টে বাংলাদেশ পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর পোশাক বিকৃত করে অশোভনভাবে উপস্থাপন করার বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান বিষয়টি সম্পর্কে তার জানার ঘাটতি থাকার কারণে এমন হয়েছে।
দেশের বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতা ও মডেল অভিনেত্রী নিয়ে অশ্লীল গান (যেমন- পালালো পালালো মুরাদ হাসান, রাতের রানী পিয়াসা, মৌ ও পরীমনি নিয়ে বিভিন্ন গান) কেন তৈরি করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে সে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। এছাড়াও বিভিন্ন গুণী শিল্পী ও কলা-কুশলীদের গান বিকৃত সুরে গাওয়া বা বাঙ্গালীর সংস্কৃতি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা, জনমনে অসন্তোষ তৈরি হয় এমন কন্টেন্ট তৈরি ও প্রকাশ সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এসব জিজ্ঞাসাবাদে সে তার ভুল স্বীকার করেছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের কার্যকলাপ করবে না মর্মে সে মুচলেকা দিয়েছে। মুচলেকায় উল্লেখিত বিষয়সমূহ হচ্ছে: অভিনয়ের ক্ষেত্রে যেকোন বিশেষ বাহিনীর পোশাক ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিকৃতভাবে উপস্থাপন না করে তা যথাযথ নিয়ম মেনে সে সঠিকভাবে উপস্থাপন করবে; বাঙ্গালি সংস্কৃতি বিকৃতভাবে উপস্থাপিত হয় এমন কোন কন্টেন্ট সে তৈরি ও প্রচার করবে না; ব্যাঙ্গাত্মক, মানহানিকর, হেয় প্রতিপন্নমূলক কোন কন্টেন্ট সে তৈরি ও প্রচার করবে না; ও এমন কোনো কন্টেন্ট সে প্রচার করবে না যাতে জনমনে অসন্তোষ তৈরি হয়।
আপনার মতামত লিখুন :