• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

গুচ্ছে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় জবি শিক্ষকরা


সোহানুর রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২৩, ০৯:৪২ পিএম
গুচ্ছে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় জবি শিক্ষকরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট। ছবি : সংবাদ প্রকাশ

বেশ তোড়জোড় করেই সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একক ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। তবে এ বছরই এটা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ইউজিসির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর। আসন্ন ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে, এবারও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষকরা। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের একক ভর্তি পরীক্ষা না হলে এবার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্তেই স্থির রয়েছেন তারা।

বিগত তিন বছর ধরেই ২২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হচ্ছে গুচ্ছ পদ্ধতিতে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই পদ্ধতিতে অংশ না নেওয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এই পদ্ধতি থেকে বের হয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কারণ হিসেবে তারা নানান অব্যবস্থাপনা, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বৃদ্ধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেজ নষ্ট হওয়ার কথা বলে আসছিলেন।

গত শিক্ষাবর্ষে অনেক জলঘোলার পর রাষ্ট্রপতির আদেশ ও চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের শর্তে গুচ্ছে অংশ নিয়েছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। পরবর্তী শিক্ষাবর্ষ থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা না গেলে গুচ্ছে অংশগ্রহণ করবে না বলে শিক্ষামন্ত্রী, ইউজিসিসহ সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতারা। এবার নানামুখী জটিলতায় সরকার একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করতে না পারায় গুচ্ছে না গিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্তেই অনড় রয়েছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের শুরু দিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৩৬টি বিভাগ, ২টি ইনস্টিটিউট এবং শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের চ্যান্সেলরের অভিপ্রায় অনুযায়ী ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে একক ভর্তি পরীক্ষার আওতায় আনতে ইউজিসি তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা এবং স্বাতন্ত্র্য রক্ষার্থে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) এবং বিবিএ প্রথমবর্ষে ভর্তি পরীক্ষা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এককভাবে আয়োজনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতারা জানান, ভালো একটি উদ্যোগকে সামনে রেখে গুচ্ছ পদ্ধতি চালু করা হলেও প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এর বাইরে থাকায় সেই উদ্যোগ সফল হয়নি। বরং পরীক্ষা গ্রহণে বিলম্ব, ভর্তি প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় নেওয়া ও নানামুখী সংকটে শিক্ষার্থীরা আরও ভোগান্তিতে পড়েছে। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েরও ইমেজ নষ্ট হয়েছে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মানসম্মত ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করতে না পারায় যেমন মেধাবী শিক্ষার্থী ভর্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তেমনই গুচ্ছ পদ্ধতির কারণে সেশনজটের কবলেও পড়েছে। রাষ্ট্রপতির অভিপ্রায় এবং ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে সরকারের উদ্যোগে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে একক ভর্তি পরীক্ষা চালুর সিদ্ধান্তে সম্মান জানিয়ে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছে অংশ নিলেও এবার তা হচ্ছে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসি একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে ব্যর্থ হওয়ায় গুচ্ছে না গিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকছেন তারা।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, “আমরা আগে থেকেই দাবি জানিয়ে আসছি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একক ভর্তি পরীক্ষার জন্য। রাষ্ট্রপতির নির্দেশনার কারণে আমরা গত বছর গুচ্ছে ছিলাম। তখন আমরা বলেছিলাম আগামীবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয় একক ভর্তি পরীক্ষায় গেলে তবেই আমরা সেখানে যাব। নইলে আমরা নিজেরাই এককভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেব। আমরা সেই সিদ্ধান্তেই অটল আছি। এই সিদ্ধান্তের বাইরে আর কোনো সুযোগ নেই। ইউজিসি থেকে চিঠি এলে সেখানেও আমরা বিষয়টি আবারও পরিষ্কার করব।”

জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. একেএম লুৎফর রহমান বলেন, “আমাদের আগের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া আছে যে, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে একক ভর্তি পরীক্ষা না হলে আমরা গুচ্ছে যাব না। সেটাতেই অনড় আছি। আমাদের শিক্ষকরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় একক ভর্তি পরীক্ষা চান। সব বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের শিক্ষকরাই সভায় বসে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর

Link copied!