ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর সন্ত্রাসী হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতি।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।
মানববন্ধনে শিক্ষকরা অতি দ্রুত গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্বনেতাদের কার্যকরী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। পাশাপাশি ফিলিস্তিনিকে যাতে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় তার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণহত্যার পক্ষে অবস্থান নেওয়ার তীব্র নিন্দা জানান তারা।
এ সময় ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেন, “যারা এক সময় মুসলিম উম্মাহর কথা বলতেন, তারা আজ গাজাবাসীর পাশে দাঁড়াচ্ছেন না। আমরা চাই এই গণহত্যা বন্ধ হোক।”
শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রহিম বলেন, “১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর যখন জাতিসংঘে মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র ঘোষিত হয়েছিল, তখন এর মূল ছিল আমেরিকা। কিন্তু আমরা যদি দেখি তারাই এখন মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। জাতিসংঘ যখন যুদ্ধ বন্ধের জন্য দাবি তুলছে তখন আমেরিকা সেখানে ভেটো দিচ্ছে। আমরা তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে এই ধরনের গণহত্যা বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, “আজ নিষ্ঠুরভাবে মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। যুদ্ধবিরতি ঘোষণা দেওয়ার পরেও যুদ্ধ বন্ধ হচ্ছে না। গতকাল (শুক্রবার) যুদ্ধ বিরতির বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে ১৫টি রাষ্ট্রের মধ্যে ১৩টি রাষ্ট্র যুদ্ধ বন্ধের পক্ষে ভোট দিলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। এখানে কী বোঝা যাচ্ছে- ইসরায়েল মাঠে থেকে যুদ্ধ করছে কিন্তু তার সব ধরনের রসদ যোগাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তা না হলে যখন নিরাপত্তা পরিষদের ১৩টি রাষ্ট্রই যুদ্ধ বন্ধ করতে বলছে, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেখানে ভেটো দিচ্ছে।”
উপাচার্য আরও বলেন, “গতকাল ফিলিস্তিনের একজন কবিকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি কবিতা লিখে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সাহস যোগাতেন। যারা বিশ্বজনমত সৃষ্টি করছে তাদের আজ হত্যা করা হচ্ছে। ১৯৭১ সালে যেমন পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল, সেভাবেই আজ ফিলিস্তিনের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হচ্ছে।”
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদার সঞ্চালনায় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এম অহিদুজ্জামান, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস ছামাদ, অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদ, অধ্যাপক ড. সৌরভ সিকদার, অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম, অধ্যাপক ড. সুরাইয়া আক্তার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।