• ঢাকা
  • শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ জ্বিলকদ, ১৪৪৪

ইবি ‘সমকামী’ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কা


ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২৫, ০৩:১১ পিএম
ইবি ‘সমকামী’ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কা
হাফিজুল ইসলাম। ছবি : প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি ও সমকামিতায় বাধ্য করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অতিরিক্ত আইজিপি ড. আশরাফুর রহমান এ তদন্ত করছেন। তিনি এ তদন্ত কাজ ক্যাম্পাসের ভেতরে শুরু করলেও অজানা কারণে ক্যাম্পাসের বাহিরে নিয়ে যাওয়ায় সুষ্ঠু তদন্তের ব্যাপারে শিক্ষার্থীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ।

জানা যায়, সমকামী শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের তদন্ত কাজের জন্য শনিবার (১৭ মে) সকাল ১০টায় কুষ্টিয়ার দিশা টাওয়ারে ১০ জন শিক্ষককে সাক্ষাৎকারের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ক্যাম্পাসের তদন্ত কাজ ক্যাম্পাসের বাহিরে নিয়ে যাওয়ায় ক্যাম্পাসজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। 

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, উনি (ড. আশরাফ) শুক্রবার (১৬ মে) আমাদের শিক্ষকদের সঙ্গে এ বিষয়টি নিয়ে বসেছিলেন। আমাদের সঙ্গে দুপুর ২টার দিকে বসার কথা ছিল, এর আগে তিনি মতবিনিময়ে ছিলেন। কিন্তু আমাদের সঙ্গে সেভাবে বসেননি। বিকেল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করিয়ে তিনি চলে যান। তদন্ত কাজে শিক্ষার্থীরা তাকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। ক্যাম্পাসের তদন্ত কাজ ক্যাম্পাসের মধ্যে হওয়া উচিত। ক্যাম্পাসের বাহিরে কেন হচ্ছে বা হবে এ বিষয়টি আমাদের বোধগম্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড তদন্ত কাজ অথবা বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমরা শুনেছি অভিযুক্ত শিক্ষককে মুক্ত করার চেষ্টা চলছে। সে আশঙ্কা সত্য প্রমাণিত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।”

ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী বোরহান কবির বলেন, “শুক্রবার একটা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছে যে, আমরা ডিআইজিকে অবরুদ্ধ করে তদন্ত কাজে বাধা দিয়েছি। অথচ আমরা যদি তাকে অবরুদ্ধ করতাম তিনি ভবন থেকে হতে পারতেন? আজকে আবার ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে কিছু শিক্ষকদের নিয়ে তদন্ত কাজের নামে হাফিজকে বাঁচানোর পাঁয়তারা করছে। যেসব শিক্ষক সেখানে যাচ্ছে তাদের সঙ্গে সমকামিতার সম্পর্ক আছে নাকি? অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা না বলে ওই শিক্ষকদের সঙ্গে কীসের পরিকল্পনা করছে, তা আমার বোধগম্য নয়।”

এ বিষয়ে সিন্ডিকেট সদস্য অতিরিক্ত আইজিপি ড. আশরাফুর রহমান বলেন, “ক্যাম্পাসের পরিবেশটা ভালো না। ক্যাম্পাসে যেকোনো মুহূর্তে মব সৃষ্টি হতে পারে। তাই তদন্ত কাজের জন্য শিক্ষকদের কুষ্টিয়ায় আমন্ত্রণ জানিয়েছি।”

তদন্ত কাজের জন্য যে দশজন শিক্ষককে সাক্ষাৎকারে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তারা সমকামী শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের ঘটনার সঙ্গে কীভাবে সংশ্লিষ্ট জানতে চাইলে আশরাফুর রহমান বলেন, “এটা আমি জানি না, এটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভালো জানে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাক্ষাৎকারে আমন্ত্রিত এক শিক্ষক বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কাজ বিশ্ববিদ্যালয়েই হওয়া উচিত। ক্যাম্পাসে হওয়াতে তো কোন সমস্যা দেখি না। কী কারণে কুষ্টিয়ার দিশা টাওয়ারে হচ্ছে সে বিষয়টিও বোধগম্য নয়। নিরাপত্তার অজুহাতে এমনটি করা অযৌক্তিক।”

বিশ্ববিদ্যালয়ে তদন্ত কার্যক্রমে নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, “ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক আছে। এখানে কোনো সমস্যা নাই। ক্যাম্পাসে তদন্ত কাজ নির্বিঘ্নে করতে পারে।”

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের শাস্তি পর্যালোচনার জন্য সিন্ডিকেট সদস্য ড. আশরাফুর রহমানকে নিয়ে এক সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর

Link copied!