• ঢাকা
  • শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৭

বছরের শুরুতে পাঠ্যবই পাবে কি শিক্ষার্থীরা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৫, ০১:৩৩ পিএম
বছরের শুরুতে পাঠ্যবই পাবে কি শিক্ষার্থীরা
ছবি : সংগৃহীত

এ বছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দিতে প্রায় তিন মাস দেরি হয়েছিল। আগামী বছরও সব শিক্ষার্থীর হাতে বছরের শুরুতে নতুন বই তুলে দেওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ, মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই ছাপার দরপত্রপ্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। তবে প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই ছাপার কাজ চলছে পুরোদমে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা যায়, সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির ৩২তম সভায় নতুন শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বইয়ের দরপত্র অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তাই নতুন করে আবার এই তিন শ্রেণির দরপত্রপ্রক্রিয়া শুরু করেছে এনসিটিবি। আর নবম-দশম শ্রেণির দরপত্র মূল্যায়নের কাগজপত্র এখনো অনুমোদন হয়নি।

অবশ্য এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ জানুয়ারির শুরুতেই সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন পাঠ্যবই পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে আশাবাদী। একই আশা ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদও। গত ২১ সেপ্টেম্বর সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, চলতি বছর নতুন বই তুলে দিতে দেরি হলেও আগামী শিক্ষাবর্ষে জানুয়ারি মাসেই শিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে পাবে।

সূত্র বলছে, সব মিলিয়ে মোট ২৮০টি লটের ১২ কোটির বেশি বই ছাপানোর দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির বইয়ের সংখ্যা ৪ কোটি ৪৩ লাখ ২১ হাজার ৯০৬, সপ্তম শ্রেণির ৪ কোটি ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৯২ এবং অষ্টম শ্রেণির ৪ কোটি ২ লাখ ৩৪ হাজার ৬৯৮টি। দরপত্র বাতিল হওয়া তিন শ্রেণির মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল গত ১৯ মে, সপ্তম শ্রেণির ১৫ মে এবং অষ্টম শ্রেণির ২ জুন।

সরকার ২০১০ সাল থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে নতুন পাঠ্যবই দিচ্ছে। করোনা মহামারি ছাড়া বাকি বছরগুলোতে শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনেই উৎসব করে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যের পাঠ্যবই তুলে দেওয়া হয়। তবে গত বছর বই

উৎসব ছাড়াই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়। আগামী বছরও প্রথম দিনে নতুন বই তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে এনসিটিবির।

জানা যায়, আগামী বছরের জন্য প্রাক্-প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর মিলিয়ে ৩০ কোটি ২ লাখ ৫৫ হাজার ৬৭৯ কপি পাঠ্যবই ছাপাতে হবে। এগুলোর মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের জন্য ২১ কোটি ৪৩ লাখ ১৮ হাজার ৪০ ও প্রাথমিক স্তরের জন্য ৮ কোটি ৫৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬৭৯টি রয়েছে। এসব বই ছাপানো ও বিতরণে সম্ভাব্য খরচ ধরা হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি।

নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে মাত্র তিন মাস বাকি। কিন্তু এনসিটিবি এবং মুদ্রণকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তরের ৫৩৪টি লটের পাঠ্যবই ছাপানোর দরপত্রপ্রক্রিয়াই শেষ করা যায়নি। তবে প্রাথমিক স্তরের প্রায় ২২ লাখ পাঠ্যবই ছাপা শেষে বিতরণের জন্য উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে।

সাধারণত নতুন করে দরপত্র আহ্বান করে এই তিন শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপাতে পাঁচ মাস সময়ের প্রয়োজন। যদিও গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা বলছে, কোনো কোনো বছর এর চেয়ে সময় লেগেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নভেম্বর-ডিসেম্বরে মুদ্রণকারীরা নোট-গাইড ছাপানোয় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আবার আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে পোস্টার ছাপানোর কাজও বাড়বে। সব মিলিয়ে জানুয়ারির শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।

Link copied!