বার্ষিক পরীক্ষার ঠিক আগে থেকেই আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) থেকে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শুরু হলো সহকারী শিক্ষকদের লাগাতার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি। এতে ৬৫ হাজারের বেশি স্কুলের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাতে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়।
সংগঠনটি জানায়, ৩০ নভেম্বর থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা থাকলেও দাবির বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় তা এগিয়ে এনে আজ থেকেই পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে।
৮ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি এবং পরদিন শাহবাগে ‘কলম সমর্পণ’ কর্মসূচির সময় পুলিশি হামলায় শতাধিক শিক্ষক আহত হওয়া পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে।
পরবর্তীতে— ৯ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা এবং ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক। এই দুই আলোচনায় সংগঠনটিকে তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতেও উল্লেখ ছিল।
কিন্তু সংগঠনের অভিযোগ— ১৫ দিন পার হলেও ১১তম গ্রেডের প্রজ্ঞাপনসহ কোনো দাবির বাস্তবায়নে অগ্রগতি দেখা যায়নি, ফলে কর্মসূচি এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ যে তিন দফা দাবির জন্য আন্দোলনে রয়েছে— সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা নিরসন এবং সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি নিশ্চিত করা
এর আগে ২৫ নভেম্বর থেকে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ একই তিন দফা দাবিতে আজ পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করছে।
ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেরা বেগম বলেন— আমরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু কোনো বাস্তব অগ্রগতি নেই। তাই বাধ্য হয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে যেতে হচ্ছে।
দেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় বড়সড় অচলাবস্থা তৈরি হওয়ার শঙ্কা
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী—
দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৫,৫৬৭টি। এসব স্কুলে শিক্ষক ৩ লাখ ৮৪ হাজার।
সম্প্রতি সরকার প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে, কিন্তু এতে সহকারী শিক্ষকরা নিজেদের অবহেলিত মনে করছেন।
তাদের যুক্তি— অন্যান্য অনেক পদে (যেমন নার্স, কৃষি কর্মকর্তা, এসআই, মাধ্যমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষক) কেবল স্নাতক ডিগ্রি থাকলেই ১০ম গ্রেড দেওয়া হয়।
কিন্তু প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের— স্নাতক ডিগ্রি ছাড়াও সিএনএড, বিপিএড বা বিটিপিটি কোর্স করতে হয়। তারপরও তারা ১৩তম গ্রেডেই রয়ে গেছেন।



































