বাংলাদেশের বিপক্ষে যারা দেশ-বিদেশ থেকে ষড়যন্ত্র করছে, তারা র্যাবের ভূমিকা নিয়ে অনেক কথা বলছে। অথচ এই র্যাব বাংলাদেশে মাদক-সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশে মাদক-সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ আমরা অনেক উন্নত দেশের তুলনায় কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যারা আজকে র্যাবের ভূমিকা নিয়ে কথা বলছেন, তারা আসলে চান এখানে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্য হোক এবং মাদক আরো ছড়িয়ে পড়ুক। অন্যথায় র্যাবের বিরুদ্ধে এভাবে তারা ঢালাওভাবে কথা বলতে পারেন না।’’
শনিবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে নবীন আইনজীবীদের বরণ ও কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মুহাম্মদ এনামুল হকের সভাপতিত্বে ও এড. আবদুল্লাহ আল মামুনের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এডহক কমিটির সদস্য মো. মুজিবুল হক বিশেষ অতিথি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়াউদ্দিন স্বাগত বক্তার বক্তব্য দেন। সভাশেষে নবীন আইনজীবীদের হাতে সনদ তুলে দেন মন্ত্রী।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘‘র্যাবের কোন সদস্য যদি ভুল করেন, তাদের বিচার হয়েছে এবং হয়। যে কেউ ভুল করতে পারে, তাদের বিচার হয়, তদন্ত হয়, শাস্তিও দেওয়া হয়। র্যাবকে অব্যাহতভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমের অনেক দেশ কারিগরি সহায়তা দিয়েছে। ২০০৪ সালে বেগম খালেদা জিয়াই র্যাব প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারা যখন সহায়তা দিয়েছে র্যাব তো তখন থেকে কাজ করছে, তখন তো এ প্রসঙ্গগুলো আসে নাই। হঠাৎ এখন কেন আসছে, এটার পেছনে নিশ্চয়ই কিন্তু আছে।’’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যখন কোন দেশ এগিয়ে যেতে থাকে তখন আন্তর্জাতিক বিভিন্ন শক্তি সেই দেশের পা’টা টেনে ধরতে চায়, তখন মানবাধিকারসহ বিষয়গুলোকে সামনে নিয়ে আসে, অথচ তাদের দেশে মানবাধিকারের কোন খবর নাই। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিখোঁজ হয়, গুলিতে মৃত্যুবরণ করে। সেগুলো নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো কখনো বিবৃতি দেয় না। ক’দিন আগে জাতিসংঘের ইন্ডিপেন্ডেন্ট হিউম্যান রাইটস এক্সপার্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহবান জানিয়েছে, গুয়ান্তানামো বে’তে যে বন্দি নির্যাতন হচ্ছে, সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, সেই কারাগার বন্ধ করে দেয়ার জন্য। সেটি নিয়ে তো কোন মানবাধিকার সংগঠন বিবৃতি দেয়নি।’’
এ সময় নবীন আইনজীবীদের অভিনন্দন জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘‘আইন পেশাটা শুরুতে খুব কুসুমাস্তীর্ণ নয়। শুরুতে অর্থের পেছনে দৌড়ালে অনিয়মের সাথে যুক্ত হয়ে যেতে হয়। সেটি ভালো আইনজীবী হবার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা। অনেকের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকবে, কিন্তু যিনি ধৈর্য্য ধরে লেগে থাকেন তিনি পরবর্তীতে ভালো আইনজীবী হন। আইনজীবীরা সমাজের স্বাভাবিক নেতা এবং মানুষকে আইনী সহায়তা দিয়ে সমাজে ন্যায় ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন। সেজন্য আইনজীবী পেশায় সৎ থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’
এর আগে সকালে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বন্দরনগরী চট্টগ্রামের ডিসি অফিস প্রাঙ্গণে শেখ রাসেল চত্বরে করোনার ওমিক্রন সম্পর্কে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
এরপর অসহায় মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন তিনি।