• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আত্রাই নদে পানি বাড়ছে, বন্যার আতঙ্কে মান্দার মানুষ


নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩, ০২:২০ পিএম
আত্রাই নদে পানি বাড়ছে, বন্যার আতঙ্কে মান্দার মানুষ

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নওগাঁর মান্দায় হু হু করে বাড়ছে আত্রাই নদের পানি। এ নদের পানি বেড়ে এখন বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে যেকোনো সময় তা বিপৎসীমা অতিক্রম করবে।

এদিকে নদীর পানি বাড়তে থাকায় বেড়িবাঁধের পুরাতন তিনটি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট ভেঙে যেকোনো মুহূর্তে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে পারে। এতে আতঙ্কে রয়েছেন নদীর দুই তীরের মানুষ।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে আত্রাই নদীর পানি একটু একটু করে বাড়ছে। এ অবস্থায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাড়তে থাকে এ নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় এ নদীর পানি ৮০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের বন্যার সময় নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নের পারনুরুল্লাবাদ গ্রামের ভাদু মকবুলের বাড়ির পূর্বপাশে এবং বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চকরামপুর ও কয়লাবাড়ি নামকস্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। পরে বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হয়। তবে নদীর পানি বাড়লে যেকোনো মুহূর্তে পানি ভেতরে প্রবেশ করতে পারে। এতে তলিয়ে যাবে খেতের ফসল। পানিবন্দী হয়ে পড়বে অন্তত পাঁচ শতাধিক পরিবার।

নদীপাড়ের বাসিন্দারা জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ মুহূর্তে বন্যা আতঙ্কে থাকেন তারা। দিনরাত পাহারা বসিয়ে রক্ষা করতে হয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। ফসল ও বাড়িঘর রক্ষার জন্য স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করেন তারা।

বন্যাকবলিত এলাকা বলে পরিচিত চকরামপুর গ্রামের বাসিন্দা খলিল হোসেন বলেন, ২০১৭ সালের বন্যায় বেড়িবাঁধের দুই স্থান ভেঙে যায়। নদীর পানি বাড়লেই তা লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। তলিয়ে যায় বেড়িবাঁধের ভেতরে থাকা বিভিন্ন ফসলের খেত। পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগ পড়েন কয়েক হাজার মানুষ।

বনকুড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জব্বার বলেন, আত্রাই নদীর ডান তীরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার করা হয়নি। তবে এবার সংস্কার হয়েছে। এ অবস্থায় পানি বাড়তে শুরু করলে নদীপাড়ের মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) প্রবীর কুমার বলেন, কয়েক দিনের বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে আত্রাই নদীর পানি বাড়ছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। ঝুঁকির মুখে পড়বে কয়েকটি বেড়িবাঁধসহ দুই তীরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধ।

প্রবীর কুমার আরও বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো মনিটরিংয়ের কাজ চলছে। বাঁধ রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত মালামাল মজুত রাখা হয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, বন্যা মোকাবেলায় এরই মধ্যে ৭ সদস্যের তদারকি টিম গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া জরুরি মুহূর্তের জন্য বস্তাসহ বিভিন্ন উপকরণ প্রস্তুত রাখার কাজ চলছে।

Link copied!