• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

কাজে আসছে না সোয়া সাত কোটি টাকার সেতু


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০২৪, ০৭:১২ পিএম
কাজে আসছে না সোয়া সাত কোটি টাকার সেতু
সদর উপজেলার পোড়াবাড়ী গ্রামের ধলেশ্বরী নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। ছবি : প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলে সোয়া সাত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি কোনো কাজে আসছে না। সংযোগ সড়ক বা অ্যাপ্রোচ না থাকায় ব্যবহার করা যাচ্ছে না সেতুটি। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ। এলাকাবাসী বর্ষা মৌসুমে নৌকা আর শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করেন।

সদর উপজেলার পোড়াবাড়ী গ্রামের ধলেশ্বরী নদীর ওপর এই সেতু নির্মাণ করা হয়।  স্থানীয়দের অভিযোগ, এলজিইডি কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অতি দ্রুত এই ব্রিজটি চলাচলের উপযোগী করে দেয়া হোক।

এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাত কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে পোড়াবাড়ী কাতুলী সড়কের ধলেশ্বরী নদীর ওপর ১০০ মিটার চেইনেজে ৯০ মিটার গার্ডার সেতু নির্মাণের কাজ পায় মেসার্স তাপস ট্রেডার্স নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। সেতুটির কাজ ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের শুরুর দিকে সেতুটির মূল অবকাঠামোর কাজ শেষ করে ঠিকাদার।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটির দুপাশের সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হয়নি। সাঁকো দিয়ে নদী পার হচ্ছেন স্থানীয়রা। সেতুর পাশে দিয়ে পোড়াবাড়ী, ছিলিমপুর, কাতুলী ও মাহমুদনগর ইউনিয়নের যাওয়ার কাঁচা রাস্তা। বর্ষার সময় সেই কাঁচা রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে যায়।

খারজানা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ বলেন, “ব্রিজ আছে রাস্তা নাই। ব্রিজের দুপাশ মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়নি। আমরা বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করি। বর্ষা মৌসুমে নৌকার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সময় মতো নৌকা ধরতে না পারলে আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। ব্রিজটা হয়ে গেলে আমাদের আর নৌকার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। সময় মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবো। সরকারের কাছে দাবি অতি দ্রুত ব্রিজটি চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হোক।”

স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, “ব্রিজ করে রেখেছে। কিন্তু দুপাশে মাটি দিচ্ছে না। বাঁশের সাঁকো দিয়ে আমাদের চলাচল করতে হচ্ছে। বৃষ্টি হলে সাঁকো তলিয়ে যায়।”

কৃষক আফজাল মণ্ডল বলেন, “এই ব্রিজটা যদি হয়, তাহলে আমাদের সব দিক দিয়েই সুবিধা। ছেলে-মেয়েরা স্কুল-কলেজে সঠিক সময়ে যেতে পারবে। নৌকার জন্য বসে থাকতে হবে না। কোনো ঝুঁকি থাকবে না। আমাদের কৃষি পণ্য নিয়ে যাতায়াতের সুবিধা হবে। ব্রিজটা হয়ে গেলে বাড়ি থেকে গড়িতে করে শহরে অতি তাড়াতাড়ি যেতে পারবো।”

পোড়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন বলেন, “ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে এই সেতু এভাবে পড়ে আছে। ঠিকাদার এখানে আসেন না। কোনো খোঁজ খবরও নেন না। তিনি যদি ঠিকমত কাজ করতেন তাহলে দুই বছর আগেই এই সেতু দিয়ে মানুষ যাতায়াত করতে পারতো। ইউনিয়নবাসীর দুর্ভোগ পোহাতে হতো না।”

এ বিষয়ে মেসার্স তাপস ট্রেডার্সের ঠিকাদার শরীফ মাহমুদ বলেন, “আমি আমার দিক দিয়ে সম্পূর্ণভাবে এবং সুন্দরভাবে বাস্তবায়িত করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত। রাস্তার জমি আমাকে বুঝিয়ে দিলে এক মাসের মধ্যে শেষ করবো।”

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, “জমি সংক্রান্ত কারণে জটিলতা ছিল। এটাও আমরা সম্পূর্ণ করেছি এবং জমি অধিগ্রহণের হয়ে গেলে অ্যাপ্রোচের কাজ হয়ে যাবে। ব্রিজটি আমাদের যোগাযোগের জন্য উন্মোচন হবে ।”

Link copied!