• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

উঠানে বেঞ্চ পেতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান


ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২৩, ০২:৫১ পিএম
উঠানে বেঞ্চ পেতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নে খোলা আকাশের নিচে বেঞ্চ পেতে পাঠদান করছেন ১১০ নম্বর পুকুরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

প্রচণ্ড দাবদাহে খোলা আকাশের নিচে পড়ালেখা করায় অর্ধেকের বেশি ছাত্রছাত্রী বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের পুরোনো টিনের ঘর ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণকাজ শুরু করায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে খোলা আকাশের নিচে পাঠদানের বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অভিভাবকেরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পাশে এক ব্যক্তির বাড়ির উঠানে খোলা আকাশের নিচে বেঞ্চ পেতে ছাত্রছাত্রীদের প্রচণ্ড দাবদাহের মধ্যে পাঠদান করা হচ্ছে।

কয়েকজন অভিভাবক জানান, গত রমজান মাসে বিদ্যালয়ের পুরোনো টিনের ঘর ভেঙে ফেলায় ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে বিদ্যালয়ের পাশে মন্নু হাওলাদারের বাড়ির উঠানে পাঠদান করা হচ্ছে। এতে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে গেছে।

এ বিষয়ে আজিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাজাহান হাওলাদার বলেন, “এই পুকুরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গে আমার বাড়ি। সেখানে শুরু থেকে একটি পুরোনো টিনের ঘর ছিল। নতুন ভবন বরাদ্দ হওয়ায় পর পুরাতন টিনের ঘরটি ভেঙে ফেলি। সব মালামাল আমি যত্নসহকারে রেখেছি। আমার জায়গায় বিদ্যালয়ের পুরোনো কাঠ ও টিন দিয়ে আমার খরচে একটি ঘর নির্মাণ করে দেব। সেখানে ছাত্রছাত্রীরা আপাতত ক্লাস করবে “

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিক লাভলী আক্তার জানান, দীর্ঘদিন ধরে টিনের ঘরে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছি। তারপর ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। ২০২২ সালে নতুন চারতলা ফাউন্ডেশন করে একটি একএকতলা ভবন বরাদ্দ পাই। এরপর চেয়ারম্যান পুরাতন স্কুলটি ভেঙে ফেলে। যে কারণে অন্যের বাড়িতে খোলা আকাশের নিচে লেখাপড়ায় সবার কষ্ট হচ্ছে।

ভাঙ্গা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মহসিন রেজা বলেন, “আমি ভাঙ্গায় নতুন এসেছি। ছেলে-মেয়েরা খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করছে, আমি জানতাম না। আপনারা ওই বিদ্যালয়ে গেছেন শুনে আমি ও ইউএনও মহোদয় তার সরেজমিনে গিয়েছি। খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করা দেখে আমি ক্ষুব্ধ হয়েছি। তবে কারো কাছ থেকে কোনো অনুমতি না নিয়ে কীভাবে পুরাতন স্কুলঘরটি ভাঙা হলো সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক তার দায় এড়াতে পারেন না।”

ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজিমউদ্দিন বলেন, “শুনেছি চেয়ারম্যান বিদ্যালয়ের পুরাতন ঘরটি ভেঙে ফেলেছেন এবং তার জায়গায় আরেকটি ঘর করে দেবেন। বর্তমানে ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া কষ্ট হলেও আগামী সপ্তাহে সমাধান হবে আশা করছি।”

ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, “এমপি মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী পুকুরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। দীর্ঘদিন হয় এলজিইডি বিদ্যালয়ের পাইলিংয়ের কাজ করতে দেরি করছে। তবে ছাত্রছাত্রীদের খোলা আকাশের নিচে পাঠদানের বিষয়টি আমি জানতাম না।”

Link copied!