ভারী বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে ধরলা, তিস্তা, কালজানী, ব্রহ্মপুত্রসহ কুড়িগ্রামের ১৬টি নদ-নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। এতে নদীর তীরবর্তী শতাধিক চর ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। তবে এসব নদ-নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
চর যাত্রাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা লোকমান মণ্ডল বলেন, “আমার বাড়ির সামনে তিনদিন থাকি পানি বাড়তেছে। ব্রহ্মপুত্র পানি বাড়ার সঙ্গে নদীর পার অনেকটা ভাঙি গেইছে।”
পোড়ার চরের বাসিন্দা মো. মাসুদ রানা বলেন, “আইজ সকাল থাকি ব্রহ্মপুত্রে পানি বেড়ে আমাদের উঠোনে উঠেছে। চলা-ফেরার খুব কষ্ট হইছে।”
শনিবার (১২ আগস্ট) বিকেলে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৮৯ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১১১ সেন্টিমিটার এবং তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি ধীরগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব নদীর পানি বিপৎসীমার খুব কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। তবে বড় ধরনের বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এদিকে, জেলায় গত কয়েকদিন ধরে অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সব থেকে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। অনেকে বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করছেন। অনেকে শরীরে পলিথিন জড়িয়ে বের হয়েছেন কাজের খোঁজে।
শহরের পুরাতন জাহাজ ঘর এলাকায় মাছ বিক্রি করতে আসা সুধাংশু দাস বলেন, “আজ সকাল থেকে কখনো রোদ, আবার বৃষ্টি এমন করি চলছে। এভাবে ভিজেই সাইকেলে চেপে মাছ বিক্রি করতেছি।”
পুরাতন থানা পাড়ার পথচারী মমিনুল ইসলাম বলেন, “বাড়ির জন্য ওষুধ কিনতে আসছি। রাস্তায় পানি জমার কারণে চলতে কষ্ট হচ্ছে।”
অটোরিকশা চালক খোকন মিয়া বলেন, “কী করব পেটে খিদা। বৃষ্টিত ভিজি যাত্রী উব্যা (বহন) নাগে। বৃষ্টির কারণে সকাল থাকি সাতটা মানুষক নিছি, কামাই নাই।”