• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

কালের সাক্ষী গাইবান্ধার এক গম্বুজ মসজিদ


মো. তৌহিদুর রহমান তুহিন, গাইবান্ধা
প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২২, ০৮:৪৬ এএম
কালের সাক্ষী গাইবান্ধার এক গম্বুজ মসজিদ

বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট মসজিদটি গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার পৌর শহরের নুনিয়াগাড়ি গাড়ি গ্রামে অবস্থিত। এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটিকে দেশের সবচেয়ে ছোট মসজিদ বলে দাবি করছেন অনেকে। কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রাচীন মুসলিম ঐতিহ্যের অনন্য এই নিদর্শনটি। এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত একটি নিদর্শন।

গাইবান্ধায় প্রাচীন স্থাপত্য নকশা ও আরবি হরফ মুদ্রিত দেশের সবচেয়ে ছোট মসজিদ ঘিরে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। তবে কে কখন এটি নির্মাণ করেছেন, তার সঠিক কোনো তথ্য জানা নেই। বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকলেও সংস্কারের মাধ্যমে মসজিদটিকে ঐতিহ্যের এক অনন্য নিদর্শন করা সম্ভব বলে মত স্থানীয়দের।

স্থানীয়দের ধারণা, চুন, সুরকি ও ইটের তৈরি মসজিদটি প্রায় পৌনে পাঁচশ বছরের পুরোনো। এর উপরিভাগে একটি গম্বুজ এবং চার কোনায় রয়েছে চারটি পিলার। প্রাচীন এ মসজিদটিতে একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন ইমামসহ চার থেকে পাঁচজন। মসজিদটির অভ্যন্তরে নামাজের জায়গা রয়েছে দৈর্ঘ্যে-প্রস্থে মাত্র ছয় ফুট।

নুনিয়াগাড়ি গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দারা জানান, ধারণা করা হয় এটি নবাব সুজা-উদ্দৌলার আমলের। বিভিন্ন সময় স্থানীয় ও সরকারিভাবে মসজিদটির ইতিহাস উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা চালানো হয়েছে।

১৯৯১ সালে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে আসেন আব্দুল মালেক। তৎকালীন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক ছিলেন আব্দুর সবুর। তারা মসজিদটি সরেজমিন পরিদর্শন করেন এবং এটির ইতিহাস উদ্‌ঘাটনের জন্য স্থানীয়দের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেন। জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের মাস্তা এলাকার প্রাচীন লাল মসজিদ ও দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ওসমানপুর এলাকার প্রাচীন সৌর মসজিদ দেখে ধারণা করা হয়, এটি নবাব সুজা-উদ্দৌলার আমলের। কারণ, নবাব সুজা-উদ্দৌলার আমলে নির্মিত ওই মসজিদ দুটোর হুবহু অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে পলাশবাড়ীর প্রাচীন এই এক গম্বুজবিশিষ্ট সবচেয়ে ছোট মসজিদটি।

মসজিদটি রক্ষায় এর পূর্ব পাশে নতুন বড় একটি মসজিদ নির্মিত হয়েছে। যেখানে এলাকাবাসীসহ দূরদূরান্ত থেকে প্রাচীন মসজিদটি দেখতে আসা ধর্মপ্রাণ মানুষ নামাজ আদায় করে থাকেন।

মসজিদটির বিষয়ে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক অলিউর রহমান বলেন, “আমি মসজিদটি নিজে পরিদর্শন করব এবং মসজিদটি সংস্কারের মাধ্যমে ঐতিহ্য রক্ষায় কাজ করব।”

মসজিদটি সংরক্ষণের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগসহ বিভিন্ন দফতরে আবেদন করা হলে ২০১৩ সালের ২ জুন মসজিদটিকে সংরক্ষিত প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ফলে মসজিদটি রংপুর বিভাগের মধ্যে প্রাচীন স্থাপত্যের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।

Link copied!