• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জমির আগাছা এখন কৃষকের গলার কাঁটা


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২৩, ০৩:১৮ পিএম
জমির আগাছা এখন কৃষকের গলার কাঁটা

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে উঁচু জমিতে আমন ধান চাষাবাদ করা গেলেও বন্যা ও টানা বৃষ্টিতে নিচু জমিতে আমন ধান চাষ করা সম্ভব হয় না। এসব জমি অনাবাদি থাকায় যেখানে-সেখানে জন্মায় কচুরিপানাসহ নানা জাতের আগাছা। ফলে প্রতি বছরই অনাবাদি থেকে যায় শত শত একর ফসলি জমি। অন্যদিকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় আমন ধান চাষ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা।

জমিগুলো কয়েক মাস জলাবদ্ধতা থাকার পর এখন পানি নেমে গেছে। কিন্তু রয়ে গেছে কচুরিপানাসহ বহু জাতের আগাছা। বীজতলা ও আগাম বোরো ধান রোপনের লক্ষ্যে এসব অনাবাদি জমিতে জন্মানো আগাছা অপসারণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তবে, এসব আগাছাই এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগাছা পরিষ্কার করতে কৃষকের গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত হাজার হাজার টাকা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার নিকরাইল খালপাড় এলাকা, কয়েড়া ধোপাচড়া বিল, আমুলাদহ বিল, বিলচাপড়া বিল, রুহুলী বিল, বিল কয়া, নিকলা বিল, তারাই বিল, মাছিহাটা পাড়া বিল, আনার খাঁ পাড়া বিলসহ অসংখ্য ছোট-বড় বিলে কচুরিপানাসহ নানা জাতের ঘাসে সয়লাব হয়ে আছে। বর্তমানে জমিগুলোর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় আগাছা পরিষ্কার করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। সে আগাছা পচনের লক্ষ্যে জমিতেই স্তূপ করে রাখা হয়েছে।

নিকলার আগাছা পরিষ্কার করতে আসা কৃষক শাহজাহান মণ্ডল বলেন, আমন মৌসুমে অথৈই পানি থাকে। তখন ধান চাষ করতে পারি না। ফলে পানিতে কচুরিপানাসহ নানা জাতের ঘাস জন্মে চট পড়ে যায়। আগাছা দমনে আগাছা কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো কাজ হয় না। এখন পানি শুকিয়ে গেছে, বীজতলা ও আগাম বোরো ধান রোপনের সময়। তাই অনেক কষ্টে জমির আগাছা পরিষ্কার করতে নেমেছি। এছাড়া অতিরিক্ত খরচ লাগছে, শ্রমিকের মজুরিও বেশি।

কয়েড়ার কৃষক রাশেদ আলী বলেন, ঘাস ও কচুরিপানায় পায়ে কাঁদাও লাগে না। ঘাসের চট লেগে গেছে। ৩০ শতাংশ জমি ৪ দিন ধরে পরিষ্কার করছি। কিন্তু এখনও শেষ করতে পারেনি। আরও দুদিন সময় লাগবে। বন্যা ও টানা বৃষ্টির পানির কারণে জলাবদ্ধতায় এমনটা হয়। পানি নিষ্কাশনে কোনো ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ফলে অনাবাদি থেকে যায় শত শত একর জমি, জন্ম নেয় বিভিন্ন ধরনের আগাছা।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১ বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমির আগাছা পরিষ্কার করতে খরচ হচ্ছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। এসব জমিতে একবারই ধান চাষ করা হয়। জমিতে পানি প্রবেশ করে ঠিকই। কিন্তু বের হয় না। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা খালগুলো মাটি ভরাট করে রাখায় পানি নিষ্কাশন হয় না। এতে সৃষ্টি হয় দীর্ঘমেয়াদী জলাবদ্ধতা। এসব জমির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকলে শত শত একর জমি অনাবাদি থাকত না। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা জরুরি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, বন্যা ও টানা বৃষ্টির ফলে প্রতিবছরই নিম্নাঞ্চলের অনেক আবাদি জমি অনাবাদি থেকে যায়। ফলে জমিতে কচুরিপানাসহ জন্মে বিভিন্ন আগাছা। এসব আগাছা পরিষ্কার করে জমিতেই স্তুব করে পচিয়ে ফেলতে পারলে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। এছাড়া জমিতে আগাছা নাশক কীটনাশক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Link copied!