• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে হারলেন ইনু


কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২৪, ০৭:০৭ পিএম
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে হারলেন ইনু
কামারুল আরেফিন ও হাসানুল হক ইনু

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে ১৪ দলীয় জোটের হয়ে নৌকা প্রতীক নিয়েও হেরে গেছেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। জয়ী হয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কামারুল আরেফিন।

রোববার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ শেষে রাতে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নি কর্মকর্তা মো. এহতেশাম রেজা ভোটের ফল ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে কামারুল আরেফিনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেছেন।

এবার নির্বাচনে মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৯৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী হাসানুল হক ইনু পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪৪৫ ভোট।

এই আসনে মোট ভোটার চার লাখ ৫২ হাজার ৫৬২ জন। এর মধ্যে মিরপুর উপজেলায় ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৭৬ হাজার ২৬৫ জন এবং ভেড়ামারা উপজেলায় এক লাখ ৭৬ হাজার ২৯৭ জন। দুই উপজেলায় ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৬১টি। এই আসনে গত তিনবার সংসদ সদস্য হয়েছিলেন হাসানুল হক ইনু। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত জাসদ থেকে নির্বাচন করে পরাজিত হলেও ২০০৮ সালে এসে মহাজোট থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে জয়ী হন। এরপর ২০১৪ সালে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং ২০১৮ সালে জয়ী হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ইনু পেয়েছিলেন দুই লাখ ৮০ হাজার ৬৩৬ ভোট।

আশির দশকে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে যাত্রা শুরু কামারুল আরেফিনের। এরপর তিনি যুবলীগের রাজনীতি শুরু করেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ছিলেন। পরে হামলা-মামলায় টিকতে না পেরে এলাকা ছেড়ে চলে যান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এলাকায় ফিরে আসেন। ২০১১ সালে মিরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) থেকে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান হন। পরে মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। ২০১৪ সালের পর ইউপি চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে জয়ী হন। এরপর ২০১৮ সালে এসেও একই পদে জয়ী হন। এবারের নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।

জয়ী হয়ে কামারুল আরেফিন বলেন, “আমি জনতার নেতা। সব ছেড়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলাম। জনগণ ভোট দিয়ে আমার স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিয়েছে। আমি শুকরিয়া জানাই আল্লাহর দরবারে। মিরপুর-ভেড়ামারাবাসীর এই দেনা আমি কখনো শোধ করতে পারব না। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে কাজ করে যাবো।”

এদিকে ইনুর পরাজয়ের দায় আওয়ামী লীগের কাঁধেই চাপাচ্ছেন স্থানীয় জাসদ নেতারা। জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম স্বপন গণমাধ্যমকে বলেন, “আমাদের হারিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

হাসানুল হক ইনু নৌকার কতটা সমর্থন পেলেন? এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসিন বলেন, “আওয়ামী লীগের প্রকৃত নেতাকর্মীর সমর্থন আমরা পেয়েছি। তবে কিছু জায়গায় ভোটারদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে।”

Link copied!