• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২০ মুহররম ১৪৪৫

যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে গৃহবন্দী করে নির্যাতন, উদ্ধার করল পুলিশ


ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৩, ১১:৩৭ এএম
যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে গৃহবন্দী করে নির্যাতন, উদ্ধার করল পুলিশ

ফরিদপুরের সালথায় যৌতুকের দাবিতে আরিফা আক্তার (২৪) নামে এক গৃহবধূকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে গৃহবন্দী করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে।

রোববার (৭ মে) মধ্যরাতে উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কাগদি গ্রামে গৃহবধূর স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

বর্তমানে ওই গৃহবধূ ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় নির্যাতিতার পরিবার থেকে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

আরিফা আক্তারের পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ২০২০ সালে কাগদি গ্রামের কৃষক মফিজুর শেখের ছেলে হাসান শেখের (২৫) সঙ্গে নগরকান্দা উপজেলার বিবিরকান্দি গ্রামের স্কুলশিক্ষক আবুল কাশেম মাতুব্বরের কন্যা আরিফা আক্তারের বিয়ে হয়। এরপর থেকে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে বিভিন্ন সময় টাকা পয়সা আনার জন্য চাপ দিচ্ছিল। আরিফা বাবার কাছ থেকে কয়েক দফায় কয়েক লাখ টাকা এনে দিয়েছেন।

কিন্তু বছরখানেক পর আবার নির্যাতন শুরু হয়। এভাবেই প্রায় ৩ বছর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছিলেন আরিফা। তাদের সংসারে হাবিবা আক্তার নামে দেড় বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে। সর্বশেষ ৭ এপ্রিল রাতে বিদেশ যাওয়ার জন্য স্ত্রী আরিফার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন হাসান। এতে আপত্তি জানালে আরিফাকে সবাই মিলে নির্যাতন করেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে মেয়েকে উদ্ধারের জন্য আরিফার বাবা সালথা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এর পরই রাতে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরিফা আক্তার বলেন, “সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে নির্যাতন সহ্য করেও স্বামীর সংসার করে আসছি। কিন্তু আমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকদের অমানবিকতা এবং নির্যাতন মোটেও বন্ধ হয়নি। যৌতুকের জন্য প্রায় সময়ই তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল। বিদেশ যাওয়ার নামে ৫ লাখ টাকার জন্য রোববার রাতেও আমাকে প্রচণ্ডভাবে মারধর করে বাসায় বন্দী করে রাখে। উপায় না পেয়ে আমি মোবাইলে আমার বাবাকে বিষয়টি জানাই। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।”

সালথা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাকিবুল ইসলাম বলেন, “আমরা ওই গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ পেয়ে রাতেই তাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি।”

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সাদিক বলেন, “গৃহবধূকে ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে এমন একটি অভিযোগ পাই। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।”

নির্যাতনের অভিযোগ প্রসঙ্গে আরিফার স্বামী হাসান শেখ বলেন, “বিয়ের সময় মেয়ের বাবার পক্ষ থেকে আমাকে পাকা ঘরসহ বিভিন্ন সামগ্রী দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু এখনো তারা আমাকে তেমন কিছু দেয়নি। এটি সাংসারিক বিষয়। এ অভিযোগ নিয়ে আমার কিছুই বলার নেই।”

Link copied!