• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

অনাবৃষ্টিতে লোকসানে শেরপুরের বুরুঙ্গা ব্যবসায়ীরা


শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ২১, ২০২৩, ০৯:৪৪ এএম
অনাবৃষ্টিতে লোকসানে শেরপুরের বুরুঙ্গা ব্যবসায়ীরা
নদ, নদী, খাল ও বিলের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় চাহিদা কমেছে বুরুঙ্গার

শেরপুরে বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় নদ, নদী, খাল ও বিলের পানি শুকিয়ে গেছে। ফলে জেলার বুরুঙ্গা (বাঁশের তৈরি মাছ ধরার ফাঁদ) বিক্রিতে ধস নেমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুই বছর ধরে এ অবস্থা চলছে। এতে বিপুল লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা। অন্যদিকে কারিগররা জানিয়েছেন, দিন দিন বাজারে বুরুঙ্গার চাহিদা কমতে থাকায় এ পেশার সঙ্গে জড়িত হাজার হাজার শ্রমিক এখন অন্য কাজের দিকে ঝুঁকছেন।

নয়ানীবাজার এলাকার দুর্গা মন্দিরের পাশে বাঁশ ও বেতের জিনিসপত্র বিক্রয়কারী জয়নাল আবেদীন আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, দুই বছর ধরে বুরুঙ্গা ব্যবসায় তারা লোকসান দিচ্ছেন। অনাবৃষ্টির কারণে নদ, নদী, খাল ও বিলে পর্যাপ্ত পানি নেই। এ জন্য শেরপুর সদর উপজেলাসহ নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদীতে বুরুঙ্গা বিক্রিতে চরম ধস নেমেছে।

জয়নাল আবেদীন আরও বলেন, বুরুঙ্গা বিক্রির পাশাপাশি তিনি বাঁশের তৈরি খালই, ধারাই, ডুল, পাখা, কুলা, ঝাকা, বেতের পাটি ও নারকেলের ঝাড় বিক্রি করেন। এবার তিনি এক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ১২০০ পিস বুরুঙ্গা কেনেন। এ পর্যন্ত ৯০ পিস বিক্রি হয়েছে। বাকি বুরুঙ্গা গুদামে পড়ে আছে।

ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি এবার সাড়ে বারো হাজার পিস বুরুঙ্গা কেনেন। চলতি আষাঢ় মাসেই সব মাল বিক্রি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। এখন গুদাম ভাড়া এবং শ্রমিকের মজুরি দেওয়ার চাপ থাকায় কম দামেই বুরুঙ্গাগুলো বিক্রি করে দিতে চাইছেন।

ঝিনাইগাতীর বাদশা মিয়া জানান, তিনি ও তার পরিবারের আরও ৬-৭ সদস্য বুরুঙ্গা ব্যবসা করার জন্য এনজিও থেকে ১০ হাজার থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিয়ে মাল কিনেছেন। এখন সিংহভাগ মাল গুদামজাত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

বুরুঙ্গা তৈরির কারিগর শ্রীবরদীর সোলায়মান, হাশেম ও খোকা মিয়া জানায়, উপজেলার গোসাইপুর ইউনিয়নের দহেরপাড়, গোপালখিলা ও চাউলিয়া এলাকা এবং পার্শ্ববর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার চার হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বুরুঙ্গা তৈরির সঙ্গে জড়িত। কারিগররা তিন পারা, পাঁচ পারা ও সাত পারা আয়তনের বুরুঙ্গা তৈরি করতেন।

তারা আরও জানান, ওই সব এলাকার বুরুঙ্গার মান ভালো হওয়ায় জামালপুর, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় লাখ লাখ পিস বিক্রি হতো। কিন্তু অনাবৃষ্টি শুরু হওয়ায় ব্যবসা একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। কাজ না থাকায় এ পেশার সঙ্গে জড়িত হাজার হাজার শ্রমিক অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে এ পেশার সঙ্গে জড়িতের প্রশিক্ষণ ও ঋণ দিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের জেলা শাখার উপব্যবস্থাপক বিজয় কুমার দত্ত।

Link copied!