• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

অ্যাসিডদগ্ধ সোনালী এসএসসিতে ‘এ’ পেয়েছেন


সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২২, ০৪:৫২ পিএম
অ্যাসিডদগ্ধ সোনালী এসএসসিতে ‘এ’ পেয়েছেন

সাতক্ষীরার অ্যাসিডদগ্ধ সোনালী খাতুন (১৯) এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ‘এ’ গ্রেড (৪.৯৬) পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি জেলার পাটকেলঘাটা উপজেলার কুমিরা পাইলট বহুমুখী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ভকেশনাল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।

সোনালী সাতক্ষীরার তালা উপজেলার নকাটি গ্রামের নুর ইসলামের কন্যা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০২ সালের ১৯ নভেম্বর মাত্র ১৮ দিন বয়সে মা-বাবার কোলে থাকা অবস্থায় অ্যাসিড আক্রান্ত হন সোনালী। এরপর স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়ার পর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা দিতে হয় তাকে। সেখান থেকে সোনালীকে ঢাকার একটি হাসপাতালে এক বছর উন্নত চিকিৎসার জন্য আনা হয়। এ ঘটনায় হওয়া মামলায় আসামিরা গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করেছেন। বর্তমানে মামলাটি নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।

সোনালির বাবা নুর ইসলাম জানান, অত্যন্ত মেধাবী সোনালী অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে নিজের পরিশ্রম ও একাগ্রতা দিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করেছে। বাবা হিসাবে তিনি অনেক গর্বিত। ভবিষ্যতে মেয়েকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চান।

নূর ইসলাম আরও জানান, প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাঁশঝাড় কেটে ফেলা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় তারা মামলা করেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় তাদের ওপর অ্যাসিড ছুড়ে মারে। এতে সোনালী ও তার মা খোদেজা বেগম মারাত্মক দগ্ধ হন। অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজ তাদের বাড়িতে আনন্দের জোয়ার বইছে। তবে সোনালীর শরীরের ক্ষতস্থান এখনও চুলকায় ও চোখ দিয়ে পানি ঝরে।

সোনালী খাতুন জানান, এসএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করায় তিনি অনেক খুশি। ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ইচ্ছা আছে তার।

অ্যাসিড আক্রান্ত হওয়ায় সহপাঠীরা তাকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করেনি উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে সমাজের সকল স্তরের ব্যক্তিরা তাকে সাহস যুগিয়েছে। চেষ্টা করেছে তাকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার। তারা সেই কাজে সফলও হয়েছেন।

কুমিরা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক গৌতম কুমার দাশ জানান, সোনালীর এই সাফল্যে তিনি এবং তার শিক্ষকরা গর্বিত। সোনালী সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে আজ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়েছে। সোনালীর অদম্য মানসিকতা, সাহস ও সকলের সহযোগিতা তাকে এতো দূর আসতে সাহায্য করেছে। সোনালীকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ তৈরিতে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তি পর্যায় থেকে তাকে সহযোগিতা করাটা জরুরি। 
 

Link copied!