• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প

ঘর পাচ্ছে হরিজন ও শানদার সম্প্রদায়ের ৮৫ পরিবার


শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৩, ০৯:৪৮ এএম
ঘর পাচ্ছে হরিজন ও শানদার সম্প্রদায়ের ৮৫ পরিবার

শেরপুর জেলাকে ভূমিহীনমুক্ত করার অংশ হিসেবে সদর ও শ্রীবরদী উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার জমিসহ ঘর পাচ্ছেন হরিজন, ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী ও শানদার সম্প্রদায়ের ৮৫টি পরিবার। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক ওই ঘরগুলোর নির্মাণকাজ পরিদর্শন শেষে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সদর উপজেলার চরপক্ষিমারী ইউনিয়নের চর বেপারিপাড়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ৭০টি এবং শ্রীবরদীর রানীশিমুল ইউনিয়নের টেঙ্গরপাড়া গ্রামে ১৫টি ঘর গৃহহীনদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। চলতি জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ অথবা আগস্টের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘরের চাবি তুলে দেবেন উপকারভোগীদের হাতে।

সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ‘ক’ শ্রেণির ভূমিহীন এবং গৃহহীন অর্থাৎ যাদের জমিও নেই, ঘরও নেই তাদের পুনর্বাসনের জন্য এসব ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ২ শতাংশের জমিতে দুই কক্ষবিশিষ্ট  সেমিপাকা ঘর, বারান্দা, রান্নাঘর ও টয়লেটসহ বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে।

হরিজন সম্প্রদায়ের সদস্য দুধনাথ (৮৫) বলেন, “আমার জন্ম ভায়াডাঙ্গা বাজারে। ছোটবেলায় দেখেছি বাজারের সব সম্পত্তি জমিদারের। দেখতে দেখতে সব জমি অন্যদের হয়ে গেল। আমার বাপ-দাদা বলত কোনো দিন অন্যের জমি মিথ্যা কাগজ কইরা নিবি না। কিন্তু এলাকার প্রায় সবাই এখন জমির মালিক। বাপ-দাদার ভিটে যে আমাদের না, তা বুঝতে পারি নাই। তাই আমরা আজ নিজ ভূমিতে পরবাসী। হয়ে গেছি ভূমিহীন।”

স্থানীয়রা জানান, হরিজন সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে ঝুপড়ি ঘরে বা অন্যের বসতবাড়িতে ও সরকারি খাসজমিতে বসবাস করত। সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরে পানি পড়তো। এ ছাড়াও হরিজনদের কাছে কেউ বাড়িভাড়া দেয় না।

টেঙ্গরপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ১৫টি পরিবারের জন্য বসতঘর তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কয়েকটি ঘরে চলছে রঙের কাজ। স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রকৌশলী ফজলুল হক চাঁন জমিতে মাটি ফেলে চারদিক বাঁধাই করে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। বিদ্যুৎ লাইনের কাজ চলমান।

কথা হয় আশ্রয়ণ প্রকল্পে উপকারভোগী বাসিন্দা গৃহবধূ চন্দনার সঙ্গে। তার স্বামী জলধন রাজভর বাজারের কুলি। তিনি বলেন, “৩৪ বছর আগে নতুন বউ হইয়া স্বামীর একটি ছোট্ট ভাঙা ঘরে উঠি। এখনও সেখানেই থাকি।”

চরপক্ষিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকবর আলী বলেন, প্রকল্পে ঘর তৈরির যাবতীয় কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ এবং পানির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চলতি জুলাই মাসের শেষে অথবা আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই ঘরগুলো উদ্বোধন ঘোষণা করবেন।

আকবর আলী আরও বলেন, “আমার এলাকায় এবার যারা প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়েছেন তারা প্রত্যেকেই ঘুরে ঘুরে খাঁচায় করে চুড়ি, ফিতা, লজেন্স, বাদাম, মালা ও চিরুনি বিক্রিয়কারী শানদার বা সৌদাগর সম্প্রদায়ের অসহায় গরিব মানুষ।”

জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার বলেন, পাকা সড়কের পাশেই শ্রীবরদীর আশ্রয়ণ প্রকল্প। এখানে থেকে পরিবারগুলো ভায়াডাঙ্গা বাজারে গিয়ে সহজেই কাজকর্ম করে রুটি-রুজির ব্যবস্থা করতে পারবে। 

Link copied!