• ঢাকা
  • সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২, ২০ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

৩ বছরেও শেষ হয়নি ৬০০ মিটার সড়কের কাজ


ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২৪, ০৪:৪৪ পিএম
৩ বছরেও শেষ হয়নি ৬০০ মিটার সড়কের কাজ

ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে কুমার নদের পাড়ে প্রায় সাড়ে ৬০০ মিটার সড়কের অর্ধেক কাজ প্রায় ৩ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে পুরোনো ভাঙা সড়ক আরও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বাড়ছে দুর্ভোগ। বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় হাজার হাজার মানুষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি একেবারে বেহাল দশা। দীর্ঘদিন ধরে সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। বর্তমানে সড়কটি দিয়ে হেঁটে চলাচল করাও যেন দায় হয়ে পড়েছে। এতে দুর্ভোগ আরও বাড়ছে। কোনো জরুরি অবস্থায় ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশের সুযোগ নেই এই সড়ক দিয়ে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রায় তিন বছর আগে এখানে প্রায় সাড়ে ৬০০ মিটার সড়ক সংস্কারের টেন্ডার হয়েছিল। জুঁঙ্গুরদী খাদ্য গুদাম হতে কুমার নদের পাশ দিয়ে জুঁঙ্গুরদী খালপাড় পর্যন্ত আরসিসি রাস্তার টেন্ডার হয়। ২০২১ সালের ৩ মার্চ শুরু হয়ে ২০২২ সালের ২৩ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ ছিল। কিন্তু ঠিকাদার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কাজে অনিয়ম করায় স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দেন। পরে অর্ধেক কাজ রেখে চলে যান ঠিকাদার। এরপর আর সড়কটি সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।  

পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর বাবলু মাতুব্বর বলেন, “আমি কাজটি করানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। কাজে অনিয়মের অভিযোগ তুলে স্থানীয়দের বাড়াবাড়ির কারণে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়।”

এ বিষয়ে ঠিকাদার হাসিবুল হাসান আব্দুল্লাহ্ বলেন, “প্রায় সাড়ে ৬০০ মিটার সড়কের মধ্যে আনুমানিক ৩০০ মিটার কাজ করেছি। পৌরসভা থেকে বিল না দেওয়ায় এবং স্থানীয়রা বারবার কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। এটা আমার নিজ এলাকা, আমারও একটা আবেগ ছিল। আমি লাভ-ক্ষতির হিসাব করিনি। কাজটি ভালোভাবেই করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পারিনি। এতে আমিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।”

বাকি কাজ শেষ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমার বকেয়া পরিশোধ করলে আমি পিডির (প্রজেক্ট ডিরেক্টর) সঙ্গে যোগাযোগ করে দেখব। যদি সম্ভব হয় তাহলে কাজটি করে দেব। যেহেতু দুবছর আগে টেন্ডারের মেয়াদ শেষ হয়েছে কাজেই আমি চেষ্টা করব কাজটি করার, কিন্তু নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।”

নগরকান্দা পৌরসভার সাবেক মেয়র নিমাই চন্দ্র সরকার বলেন, “ঠিকাদার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কাজে অনিয়ম করেছিল। তাই তার কাজের বিল বন্ধ করা হয়েছিল। তবে যতটুকু কাজ করেছে তার সমপরিমাণ বিল পরিশোধ করা হয়েছে।”

নগরকান্দা পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী এস এম লুৎফর রহমান রানা বলেন, “এ বিষয়ে ঠিকাদারকে একটি চিঠি পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। তিনি যদি কাজটি করেন তাকে আমাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। না করলে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

এদিকে নগরকান্দা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাসুম বিল্লাহ্ বলেন, “এ বিষয়ে খুব শিগগিরই ঠিকাদারকে একটি চিঠি পাঠানো হবে। তিনি কেন কাজটি করেননি তা জানতে চাওয়া হবে। তিনি কাজটি না করলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

Link copied!