• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পাগলা মসজিদের সিন্দুকে মিলল ২৩ বস্তা টাকা


কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২৩, ১২:২৪ পিএম
পাগলা মসজিদের সিন্দুকে মিলল ২৩ বস্তা টাকা

প্রায় সাড়ে তিন মাসের মাথায় আবারও কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের আটটি সিন্দুক খোলা হয়েছে। ১২টি সিন্দুকে ২৩ বস্তা টাকা, বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা মিলেছে।

শনিবার (১৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সিন্দুক খোলা হয়। এখন চলছে টাকা গণনার কাজ।

জানা যায়, জেলা শহরের নরসুন্দা নদীর তীরের ঐতিহাসিক মসজিদটিতে আটটি লোহার দানসিন্দুক আছে। তিন থেকে পাঁচ মাস পরপর এই সিন্দুক খোলা হয়।

এর আগে গত ৬ মে ৮টি দানসিন্দুকে ১৯ বস্তা টাকা দিনভর গুনে পাওয়া গিয়েছিল সর্বোচ্চ ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা। এ ছাড়া পাওয়া গিয়েছিল বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা। ওই সময় পবিত্র রোজার মাস ও ঈদের জন্য দেরি করে পাঁচ মাস পরে দানসিন্দুক খোলা হয়েছিল। এবার অন্যান্য সময়ের তুলনায় একটু আগেভাগেই খোলা হয়েছে। এরপরও পাওয়া গেছে রেকর্ড ২৩ বস্তা টাকা। গণনা শেষে এবার এযাবৎকালের সবচেয়ে বেশি পরিমাণ অর্থ ও স্বর্ণালংকার মিলবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের। টাকা ছাড়াও মসজিদে নিয়মিত হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য মানুষ।

এ কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ। তাদের নেতৃত্বে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানসিন্দুক খোলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী মহুয়া মমতাজ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরীর উপস্থিতিতে সকাল সাড়ে ৮টায় আটটি দানসিন্দুক খুলে বিপুল অর্থ পাওয়া গেছে। প্রথমে টাকাগুলো লোহার সিন্ধুক থেকে বস্তায় ভরা হয়। পরে মেঝেতে ঢালা হয়। এখন চলছে গণনার কাজ। গণনা শেষে টাকার পরিমাণ বলা যাবে।

দানসিন্দুক খোলার সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম, মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া, মসজিদ কমিটির সদস্য আনোয়ার কামালসহ অন্যরা।

প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এখন চলছে টাকা গণনার কাজ। মাদ্রাসার দেড় শতাধিক খুদে শিক্ষার্থী, ব্যাংকের অর্ধশত স্টাফ এবং মসজিদ কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মিলে প্রায় আড়াই শ লোক টাকা গণনা করছেন।

জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ছয়তলাবিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য একটি মেগা প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে। এতে মসজিদ-মাদ্রাসাসহ অর্ধ লক্ষ মুসল্লি যাতে একত্রে নামাজ আদায় করতে পারেন, এ রকম একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একসঙ্গে পাঁচ হাজার নারীর জন্য আলাদাভাবে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে। ইতিমধ্যে এর দরপত্র ডাকা হয়েছে। ১২টি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশগ্রহণ করেছে। এই নির্মাণে প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। কাজ শুরু হলে এর পরিমাণ কমবেশি হতে পারে।

জেলা প্রশাসক বলেন, তাদের কাছে বর্তমানে নির্মাণ ব্যয়ের অর্ধেকের মতো টাকা আছে। পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহায়তা করা হয়ে থাকে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, সকাল থেকে টাকার সিন্দুক খোলা, বস্তায় ভরে এনে গণনা শেষে ব্যাংক পর্যন্ত সমস্ত টাকা নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তার কাজে তিনিসহ পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন।

Link copied!