ঠাকুরগাঁওয়ের ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৫ জন জাল সনদধারী শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ১০ জন শিক্ষক এমপিওভুক্ত হয়ে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছেন। অপর পাঁচজন শিক্ষক নন-এমপিও। জাল সনদে এমপিওভুক্ত হওয়া ওই ১০ শিক্ষক বেতন বাবদ সরকারি তহবিল থেকে ৭৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা অবৈধভাবে গ্রহণ করেছেন বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়।
অবৈধভাবে গ্রহণ করা বেতন সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া, যারা অবসরে গেছেন, তাদের অবসর সুবিধা বাতিল করা, স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের আপত্তির টাকা প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষের মাধ্যমে আদায় করা, জাল সনদধারীদের নিয়োগ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
জানা গেছে, হরিপুর উপজেলার বরমপির বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক আবদুল খালেককে ৯ লাখ ৫১ হাজার টাকা, সদরের দারাজগাঁও হামিদ আলী খান উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক দুলাল চন্দ্র বর্মণকে ১৪ লাখ ৪৪ হাজার টাকা, বৈরাগী উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক মিনু রানী কুন্ডুকে ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা, হরিপুর তোররা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক জসিম উদ্দিনকে ৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, পীরগঞ্জ সাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক ময়রুমা খাতুনকে ৭ লাখ ৭৩ হাজার টাকা, রানীশংকৈল উপজেলার জওগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি বিষয়ের শিক্ষক মীর রায়হানকে ৭ লাখ ৪২ হাজার টাকা, সদরের রুহিয়া ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি প্রভাষক আতিকুর রহমানকে ২ লাখ ২৮ হাজার টাকা, সিন্দুর্না উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক ফাইসাল আলীকে ৪ লাখ ২২ হাজার টাকা, পারপুগী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক সাইদা ইসলামকে ৭ লাখ ৭ হাজার, সালন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক আতিয়ার রহমানকে ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নন-এমপিও পাঁচ জাল সনদধারী শিক্ষক হলেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার লোলপুকুর ডি এম উচ্চ বিদ্যালয়ের হিন্দুধর্ম বিষয়ের শিক্ষক জশোদা বালা দেবী, রানীশংকৈলের নেকমরদ বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজের দর্শন বিষয়ের প্রভাষক মোশাররফ হোসেন, হরিপুরের ভাতুড়িয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক জিল্লুর রহমান, পীরগঞ্জ মহিলা কলেজের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক জগবন্ধু রায়, একই কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক দীপিকা রানী রায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মিনু রানী কুন্ডু বলেন, “আমার সার্টিফিকেট সঠিক। এরপরও কেন আমার বিষয়ে এমন আদেশ এসেছে তা জানি না। তবে মন্ত্রণালয়ের এ আদেশের বিরুদ্ধে আমি আপিল করব।”
সদর উপজেলার সালন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সমাজবিজ্ঞান শিক্ষক আতিয়ার রহমান বলেন, “সনদটি ছিল বুঝতে পেরে স্বেচ্ছায় শিক্ষকতা থেকে ২০১৯ সালে অব্যাহতি নিয়েছি।”
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার আলাউদ্দিন আল আজাদ বলেন, “জাল সনদধারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নির্দেশনাটি অফিশিয়ালি এখনো হাতে পাইনি। পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আপনার মতামত লিখুন :