• ঢাকা
  • বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩০, ২২ রজব ১৪৪৬

শহীদ রেজা-রঞ্জুর ৫০তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত


নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২১, ১১:৩৬ এএম
শহীদ রেজা-রঞ্জুর ৫০তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত

আজ ১ সেপ্টেম্বর। ১৯৭১ সালে বীর সেনানী শহীদ রেজা ও রঞ্জুর ৫০তম শাহাদৎ বার্ষিকী। বুধবার সকালে শহরের কানাইখালী এলাকায় তাদের কবরে বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন,পুষ্পস্তবক অর্পণ, শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা নীরবতা পালন, আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নাটোর পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরকারি কলেজ শাখার ছাত্রলীগ, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ এবং হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ জেলা শাখায় নেতৃবৃন্দ।

১৯৭১ সালে নাটোরের তৎকালীন ছাত্রলীগ ও সংগ্রাম পরিষদ নেতা মজিবর রহমান রেজা এবং গোলাম রব্বানী রঞ্জু ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে গুরুদাসপুর এলাকায় ঢুকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকেন। এক সময় তারা পাকিস্তানী দোসরদের প্রতারণার শিকার হয়ে রাজাকার-আলবদর বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। উপজেলার মশিন্দা এলাকা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করা হয় তাদের দু’জনকে। শরীরে পেরেক ঢুকিয়ে ও সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে নির্মম নির্যাতনের পর ১ সেপ্টেম্বর তাদের হত্যা করা হয়। অপর দুই শহীদের মধ্যে বাবুলকে পাকসেনারা ধরে নিয়ে গিয়ে ২০ এপ্রিল হত্যা করে এবং সেলিম চৌধুরী নওগাঁর রণাঙ্গনে ১ ডিসেম্বর শহীদ হন। শহরের কানাইখালী এলাকায় রেজা ও রঞ্জুকে দাফন করা হয়। মৃতদেহ না পাওয়ায় অপর দুই শহীদের পরিধেয় কাপড় একই স্থানে কবর দেয়া হয়।

তাদের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হলেও স্বাধীনতার ৫০বছরেও বিচার পাননি স্বজনরা। ২০০৮ সালে চিহ্নিত ২৪ জন রাজাকার-আলবদরের বিরুদ্ধে মামলা করেন শহীদ মজিবর রহমান রেজার ভাই বিপ্লব হোসেন। কিন্তু মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি। এছাড়া শহীদদের পরিবারের অসম্মতি ও বিরোধের কারণে তাদের স্মরণে শহীদ বেদী নির্মাণের উদ্যোগ ভেস্তে যায়।

শহীদ রেজাউন্নবীর ভাতিজা শাহরিয়ার হোসেন জানান, শুরুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ নানা সংগঠন দিনটিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করত। কিন্তু এখন সে সংখ্যা কমে গেছে। তাই প্রতিবছর পারিবারিকভাবেই শহীদদের স্মরণ করা হয়।

শহীদ সেলিম চৌধুরীর ভাতিজা বাসিরুর রহমান খান চৌধুরী জানান, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করতেন। অথচ শহীদ হওয়ার পর তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিই জোটেনি। এমনকি জেলা প্রশাসনও তাদের পক্ষ থেকে কোনো কর্মসূচি পালন করেন না।

শহীদ রঞ্জুর ভাতিজা খালিদ বিন জালাল বাচ্চু জানান, সবাই আশা করে, সরকার চার শহীদের হত্যা মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে নেবে।

নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী বলেন, “নির্বাচিত হওয়ার পর চার শহীদের কবরস্থান এলাকায় অত্যাধুনিক স্মৃতি সৌধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু শহীদ পরিবারের বিরোধিতার কারণে তা ভেস্তে যায়। তবে আমি এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
 

Link copied!