পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মৃতের পরিবার নার্স ও চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেছে পরিবারটি।
মৃত ব্যক্তির নাম শ্রী টনো কিশোর (৪৮)। তিনি বোদা উপজেলার মন্নাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
অভিযোগ উঠেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরের শরীরের খিঁচুনি উঠলে হাসপাতালে নেওয়া হয় টনো কিশোর নামের ওই ব্যক্তিকে। এ সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক চিকিৎসা দিতে দেরি করেন। ডাক্তারের দেওয়া পরামর্শে রোগীকে ওষুধ সেবনের পরে রোগীর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হলে অভিভাবকরা ডিউটি রুমে দায়িত্বে থাকা নার্স ও ডাক্তারকে অবহিত করেন। কিন্তু একাধিকবার নার্সকে বলার পরও তারা বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে বিরক্ত বোধ করেন। এ সময় রোগীর অভিভাবকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। একপর্যায়ে কোনো সেবা না পেয়ে রোগী শ্রী টনো কিশোরের বিকেলে মৃত্যু হয়।
মৃতের ভাতিজা সুবল রায় সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, “রোগীর খারাপ অবস্থা দেখে বারবার আমি চিকিৎসক ও নার্সদের বিষয়টি জানাই এবং তাদের ডাকি। কিন্তু তারা রোগীকে দেখার কোনো গুরুত্ব দেয়নি। রুমেই বসে ছিল তারা। তাদের অবহেলায় আমার কাকার মৃত্যু হয়েছে।”
ডিউটিতে থাকা অভিযুক্ত নার্স সুমি, রোজিনা, লাইলি ও শাকিলা বলেন, “ওই রোগীর দেখাশোনার দায়িত্ব ছিল দিপ্তি রানীর। তিনি রোগীকে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। আমরা মৃত রোগীর সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমরা কারও সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করিনি।”
এ বিষয়ে ডিউটিতে থাকা দিপ্তি রানীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বোদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মোমেনা খাতুন বলেন, “রোগীকে দেখার পরে যথাযথ চিকিৎসাপত্র দেওয়া হয়। অবস্থা খারাপের কথাটি আমি আগেই তাদের জানিয়েছি। আর নার্সের সঙ্গে কী হয়েছে, সেটা আমি জানি না। এ ক্ষেত্রে আমার কোনো অবহেলা ছিল না। আমরা সব সময় রোগীকে সঠিক সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি।”
বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস আই এম রাজিউর করিম বলেন, “বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। রোগীর মৃত্যুর জন্য কোনো ডাক্তার বা নার্সের অবহেলা থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা এ বিষয়ে তৎপর রয়েছি।”
পঞ্চগড় সিভিল সার্জন ডা. রফিকুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমার কাছে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”



































