• ঢাকা
  • শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩০, ১০ শা'বান ১৪৪৬

দুই চিকিৎসকের মহানুভবতায় পঙ্গুত্ব থেকে বাঁচলেন মাদ্রাসা ছাত্র 


চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২১, ০৯:২৯ এএম
দুই চিকিৎসকের মহানুভবতায় পঙ্গুত্ব থেকে বাঁচলেন মাদ্রাসা ছাত্র 

গাছের ডাল ভেঙে পড়ে কোমরের হাড় ভেঙে যাওয়া হাফেজ মো. জমির উদ্দিন সাগর (২০) নামের এক মাদ্রাসার ছাত্রের চিকিৎসায় এগিয়ে এসেছেন পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ টি এম রেজাউল করিম ও নিউরোসাইন্সের কনসালটেন্ট ডা. মো ইসমাইল হোসেন।

জমির উদ্দীন সাগর চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার মৃত শেহাব মিয়া ও শাহিদা আকতারের পুত্র। তিনি আলমশাহ পাড়া মাদ্রাসার আলিম শ্রেণির ছাত্র।

গত ২৭ জুলাইয়ের গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন জমির। হঠাৎ গাছের ডাল ভেঙে পড়ে কোমরের হাড় ভেঙে যায় তার। এ দুর্ঘটনায় জমিরের কোমরের নিচের অংশ অবশ হয়ে যায়। গুরুতর অবস্থায় এলাকার লোকজন তাকে ভর্তি করানো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসকরা এক্স-রে রিপোর্ট দেখে জানান, সুস্থ করতে জমিরের জরুরি অপারেশন প্রয়োজন। পিতৃহীন সন্তানের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে দিশেহারা মানুষের বাসা-বাড়িতে কাজ করেন মা শাহিদা।

এরপর শাহিদা ছেলেকে বাঁচানোর আকুতি নিয়ে দেখা করেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার স্বনামধন্য চিকিৎসক ও চট্টগ্রাম পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ টি এম রেজাউল করিমের সঙ্গে। জানান নিজের অসহায়ত্বের কথা। ডা.এ টি এম রেজাউল করিম সব শুনে বিনা খরচে জমিরের অপারেশনের দায়িত্ব নেন। পার্কভিউ হাসপাতালের নিউরোসাইন্সের কনসালটেন্ট ডা. মো ইসমাইল হোসেনও কোনো টাকা ছাড়াই এই মানবিক সহায়তায় অংশ নিতে অপারেশন করতে আগ্রহী হন। দুই মানবিক চিকিৎসকের চেষ্টায় শুক্রবার বিকাল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দীর্ঘ ৪ ঘণ্টার অপারেশন সফল হয়, জমিরের অবস্থাও এখন উন্নতির দিকে।

এ বিষয়ে ডা. মো ইসমাইল হোসেন বলেন, হাফেজ জমির অত্যন্ত গরীব পরিবারের সন্তান। এই ব্যয়বহুল অপারেশনের খরচ যোগানো তার পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য মানবিক দিক বিবেচনায় আমি বিনা খরচে অপারেশন করেছি। 

পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা এ টি এম রেজাউল করিম বলেন, গাছের ডাল পড়ে জমিরের কোমরের হাড় ভেঙে যায়। তার পরিবারের পক্ষে অপারেশন ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়। তাছাড়া সে আমার এলাকার অন্যদিকে আর্থিক জোগান দেয়ার মতো কোন সামর্থ্য তাদের নেই, বিশেষ করে এতিম হওয়ায় বিনা খরচে তাঁর অপারেশনে সহযোগিতা করি। 

জমির উদ্দিনের মা শাহিদা আক্তার বলেন, আমি মানুষের বাসায় কাজ করি। আমার পক্ষে  অপারেশন এই ব্যয় বহন করা সম্ভব হতো না। যারা আমার ছেলের অপারেশন বিনা খরচে করেছেন আমি তাদের জন্য দোয়া করি। 
 

Link copied!