নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রতন কুমার সাহার টিকা কার্যক্রমের জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় ১৮ লাখ টাকার আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণ মেলেছে।
বরাদ্দের ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তিন সদস্যের ওই কমিটি। তবে প্রতিবেদন দাখিলের পরও অভিযুক্ত ডা. রতন কুমার সাহার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৩১ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনার টিকা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য খরচ বাবদ অর্থ বরাদ্দ করে। এরই অংশ হিসেবে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের ১৫ ওয়ার্ডের জন্য ১৭ লাখ ৪৯ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
বরাদ্দ পত্রে বলা হয়, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে মোট ১২টি টিমে টিকাদানকারী হিসেবে প্রশিক্ষণ শেষে ২৪ জন কাজ করবেন। প্রতি টিমে চারজন করে মোট ৪৮ জন স্বেচ্ছাসেবী থাকবেন। খরচের বিবরণীতে সংশ্লিষ্ট সবার আপ্যায়ন, ডিস্ট্রিবিউট পয়েন্ট পর্যস্ত ভ্যাকসিন ও লজিস্টিক পরিবহন ব্যয়, ভিজিট ব্যয়, সুরক্ষা সামগ্রী ব্যয়, অনিয়মিত শ্রমিকদের খরচ এবং অংশ গ্রহণকারীদের সম্মানী ভাতাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত অর্থ পাঠালেও ভ্যাকসিনের অভাবে উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে কোথাও প্রশিক্ষণ ও টিকাদান কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়নি। কিন্তু বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রতন কুমার সাহা পাঁচ ইউনিয়নে করোনার টিকা কার্যক্রম পরিচালনা না করে সব কার্যক্রমের ভুয়া ভাউচার তৈরি করে বরাদ্দের সব টাকা উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
তবে বার বার রতন কুমার সাহা অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করে আসছিলেন।
সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, করোনার টিকা কার্যক্রম পরিচালনা না করেও বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ জুলাই নাটোর সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) ডা. আরশেদ আলীকে সভাপতি, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. রাসেলকে সদস্য সচিব এবং বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামানকে সদস্য করে তিনজনের কমিটি গঠন করা হয়। গত ১ আগস্ট কমিটি তদন্ত শেষে ৫ আগস্ট প্রতিবেদন জমা দেন ওই কমিটি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকাদান কর্মসূচি না হওয়া সত্ত্বেও ব্যয়ের ভুয়া বিল জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। যা বিধিসম্মত নয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদনটি পাঠানো হয়েছে।