নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ছুরিকাঘাতে নবকুমার সাহা (২৮) নামের এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (৩১ অক্টোবর) রাতে উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের পাকুন্ডা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সোয়া ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহত নবকুমার নবকুমার সাহা নরসিংদীর হাজীপুরে গ্রামের নারায়ণ সাহার ছেলে। তিনি রূপগঞ্জের বান্টি বাজারে একটি থ্রি পিছের শো রুমে ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের প্রেমিকা তাহমিনা ও বন্ধু রহমত আলীকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক তাহমিনা গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া থানার খিরাষী গ্রামের আব্দুল কাদেরের মেয়ে। রহমত আলী নরসিংদী মাধবদী নওপাড়া গ্রামের দেওয়ান আলীর ছেলে।
সংবাদ প্রকাশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তালতলা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশের ইনচার্জ ইকবাল হোসেন।
এ বিষয়ে ভূলতা পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আবদুল বারেক জানান, ছুরিকাঘাতে আহত ওই যুবককে গোলাকান্দাইল আল রাজী হাসপাতাল থেকে ঢামেকে পাঠানো হয়।
এছাড়া আহত ওই যুবক একজনের হাত ধরে বাঁচানোর আকুতি করেন বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। পেটে ছুরিকাঘাতে তিনি জখম হন।
এ সময় নিহত নব কুমারের হাতে গ্লাভস লাগানো ছিল বলেও জানান তিনি।
নিহতের ছোট ভাই শুভ সাহা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”
এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
তালতলা তদন্ত কেন্দ্র পুলিশের ইনচার্জ ইকবাল হোসেন বলেন, “নবকুমার সাহা ও তাহমিনার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু দুইজন দুই ধর্মের হওয়ায় তাদের প্রেমের সম্পর্ক নবকুমার সাহার বাড়ির লোকজন মেনে নেয়নি। এ নিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল।”
ইকবাল হোসেন আরো বলেন, “রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে কর্মস্থল থেকে মদনপুরে বন্ধু রহমত আলীকে আনতে যাচ্ছিলেন নবকুমার। পথে এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের জামপুর ইউনিয়নের পাকুন্ডা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে আসলে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়।”
ইনচার্জ ইকবাল বলেন, “স্থানীয় দু’জন আহত অবস্থায় নবকুমারকে উদ্ধার করে গাউছিয়া আল রাজী হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে রাত সোয়া ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।”
হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি পরিকল্পিত। এ ঘটনার সঙ্গে তিনজন যুক্ত ছিল বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
ইনচার্জ ইকবাল হোসেন আরো বলেন, “নবকুমারকে ঢামেকে নেওয়ার আগেই প্রেমিকা তাহমিনা রাজধানীর মহাখালী থেকে ঢামেক হাসপাতালে ছুটে যান। তাহমিনাই নব কুমার সাহাকে শনাক্ত করেন।”
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত নব কুমার সাহার প্রেমিকা তাহমিনা ও বন্ধু রহমত আলীকে আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।