• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২১ মার্চ, ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩০, ২০ রমজান ১৪৪৬
মহাসড়কে চাঁদাবাজি

অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘট ৩দিনের জন্য স্থগিত


সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১, ০৬:৫৬ পিএম
অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘট ৩দিনের জন্য স্থগিত

সুনামগঞ্জ-ঢাকা মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীবাহী বাসে দীর্ঘদিন ধরে চলছে চাঁদাবাজি। আর এই চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন গণপরিবহণ মালিক, শ্রমিক ও চালকরা। এব্যাপারে প্রশাসনের কাছে বারবার অভিযাগ করার পরও কোনো সমাধান না হওয়ায় রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় ভুক্তভোগীরা।

এরপর বিকেলে কয়েক দফা বৈঠক শেষে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে জেলা গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা তিনদিনের জন্য পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সুনামগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি এবং বহিরাগত কোনো বাস সুনামগঞ্জে আসেনি। শুধুমাত্র আঞ্চলিক সড়কে (সিলেট-সুনামগঞ্জ) যানবাহন চলাচল করে। এছাড়া সুনামগঞ্জ-কুমিল্লা, সুনামগঞ্জ-ময়মনসিংহসহ বগুড়া, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামসহ ৫টি আন্তজেলা বাস সার্ভিস ও বন্ধ রয়েছে। এর ফলে সারাদেশ থেকে সুনামগঞ্জে আগত পর্যটক ও পোষাক শ্রমিকসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও যাত্রীরা চরম ভোগান্তি পড়েছে।

এব্যাপারে জানতে সুনামগঞ্জের কয়েকটি বাস কাউন্ডারে যাওয়ার পর আটকে পড়া যাত্রী আমির হোসেন, জমির উদ্দির, পর্যটক রাজিব আহমদ, সুমন আহমদসহ আরো অনেকেই বলেন, “আমরা ঢাকা যাওয়ার জন্য সকালে বাস কাউন্টারে আসার পর জানতে পারলাম পরিবহন ধর্মঘট চলছে। আর কবে এই ধর্মঘট উঠানো হবে তা কেউ বলতে পারছে না। আমরা ঢাকা যাওয়ার জন্য বিকল্প কোনো গাড়িও পাচ্ছি না। একারণে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে।”

সুনামগঞ্জ জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক বলেন, সুনামগঞ্জ-ঢাকা মহাসড়কে যাতায়াতের সময় সিলেট বাইবাস সড়সসহ একাধিক স্থানে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদাবাজরা সরকার দলের পরিচয় ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে আন্তজেলা বাসগুলো থেকে চাঁদা উত্তোলন করছে। আর এই চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য সিলেট বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করার পরও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে নালিশ করার পর চাঁদাবাজদের চাঁদার পরিমান আরও বেড়ে গেছে। এজন্য এই পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি।

জেলা মিনি বাস ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া ও শ্যামলী পরিবহণের শ্রমিক আব্দুল করিমসহ আরও অনেকেই বলেন, চাঁদাবাজরা সংঘবদ্ধ ও বেপরোয়া। তাদের চাহিদা মতো চাঁদা না দিলে মারধর করে বাস আটক করে রাখে। চাঁদাবাজদের অত্যাচার, নির্যাতন ও চাঁদাবাজি দিনদিন বেড়েই চলেছে। শিগগিরই চাঁদাবাজি বন্ধ করাসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য এই ধর্মঘট চলবে।

পরিবহন ধর্মঘট স্থগিতের বিষয় নিয়ে জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেজাউল করিম জানান, জেলা প্রশাসকের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে তিনদিনের জন্য ধর্মঘট স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। চাঁদাবাজি বন্ধ করে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আবার ধর্মঘট চলবে।

জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি হয় এমন কাজ করা ঠিক নয়। এব্যাপারে সুনামগঞ্জ ও সিলেটের পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য আশ্বাস দেওয়ার পর তারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে।

Link copied!