দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল বাংলাদেশ দলে না থাকায় উদ্বোধনী জুটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় টিম ম্যানেজমেন্ট। টাইগার ওপেনাররা বার বারই ব্যর্থ হচ্ছেন রান করতে। ওপেনারদের ব্যর্থতা শুরু হয়েছে সর্বশেষ এশিয়া কাপ থেকে। এর ধারাবাহিকতা ওয়ানডে বিশ্বকাপেও ধরে রেখেছে। ভারতের মাটিতে স্পোর্টিং উইকেট হওয়াতে ব্যাটাররা এই বিশ্বকাপে রান পাবেন। সেটা হচ্ছেও, কিন্তু বাংলাদেশ বিশ্বমঞ্চে ৪টি ম্যাচ খেলে ফেললেও এখন পর্যন্ত দলীয় রান তিনশর ঘরে নিয়ে যেতে পারেনি।
সবশেষ স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে টাইগার দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিমের হাফ সেঞ্চুরিতে তিনশ রান ছাড়ানোর স্বপ্ন দেখছিল ক্রিকেট ভক্তরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের ইনিংস ২৫৬ রানেই থামে। এদিন টাইগারদের তিনশ রান করতে না পারার দায়টা লিটন ও তানজিদের উপরেই চাপাচ্ছেন বাংলাদেশের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরাম। সেই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের শিক্ষা নিতে বললেন ভারতীয় ব্যাটার বিরাট কোহলি থেকে।
শ্রীরাম মনে করেন এই দুই ওপেনার যখন হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তখন তাদের আরও একটু সতর্ক নিয়ে খেলতে হতো। সেই সঙ্গে হাফ সেঞ্চুরিকে সেঞ্চুরিতে রূপান্তর করা প্রয়োজন ছিল। যেমনটি করেছেন এই ম্যাচে ভারতীয় অভিজ্ঞ ব্যাটার বিরাট কোহলি। ম্যাচটিতে সেঞ্চুরি হাঁকানো কোহলি বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলেননি। সে কারণে কোহলি থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের শেখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন শ্রীরাম। বাংলাদেশের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট বলেন, “তামিম (তানজিদ) ও লিটন দাস দুজনেই অনেক হতাশ করেছে। ১৫ ওভারে ৯৩ রান করা অবস্থায় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোটাই বাংলাদেশের হাতে ছিল। কিন্তু সে অবস্থায় উইকেট দিয়ে আসা আসলেই হতাশার।’
বিশ্বকাপের শুরুর তিন ম্যাচে বাংলাদেশের ওপেনাররা দলকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে লিটন ৬৬ এবং তামিম করেন ৫১ রান। এদিন দুই ওপেনারের বিদায়ের পর মিডল অর্ডারে চূড়ান্ত ব্যর্থ ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী মিরাজ ও তাওহীদ হৃদয়রা। ফলে ম্যাচের মোমেন্টাম ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষদিকে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের প্রচেষ্টায় কোনোমতে তারা আড়াইশ রান ছাড়ায়।
কিন্তু ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে সেই রান জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ভারতীয় ওপেনাররাই সেটি হাতের নাগালে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে চলতি বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করে বাকি কাজ সারেন কোহলি। যা ভারতকে এনে দেয় ৭ উইকেটের বড় জয়। অবশ্য এমন হারের জন্য অধিনায়ক শান্তও লিটনের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসাকে দায়ী করেন। পরবর্তীতে একই সুরে কথা বলেছেন টাইগার পরামর্শক।
শ্রীরাম বলেন, “এটি ভালো দৃষ্টান্ত, তাই না? ৭০-৮০ রান করার আগ পর্যন্ত কোনো বলেই উড়িয়ে মারার চিন্তাও করেননি কোহলি। এটি আমাদের ছেলেদের জন্য অবশ্যই শিক্ষণীয়। উইকেটে বল ফেলে রান নেওয়া এবং ফাঁকা জায়গা খুঁজে নিয়ে খেলার চূড়ান্ত পেশাদারিত্ব দেখিয়েছেন কোহলি। তার থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের শেখা উচিত।”
স্বাগতিকদের কাছে হেরে বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক হারের বৃত্তে সাকিব আল হাসানের দল। তবে এখনও জয়ের ধারায় ফেরার উপায় খুঁজতে বললেন শ্রীরাম। বাংলাদেশের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট বলেন, “আমার মতে বিশ্বকাপ দীর্ঘ সময়ের টুর্নামেন্ট এবং প্রতিটি হারই যন্ত্রণার। তবে প্রত্যাবর্তনের জন্য উপায় খুঁজতে হবে। পরবর্তী ম্যাচে যেন তারা জিততে পারে সেদিকে ফোকাস করা উচিত।”
২৪ অক্টোবর মুম্বাইয়ের ওয়ানখেড়ে স্টেডিয়ামে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে একাদশে ফিরতে পারেন টাইগারদের নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ভারতের বিপক্ষে পায়ের পেশির ক্র্যাম্পের ইনজুরিতে থাকা বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের অনুপস্থিতিতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত।