অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশের কৃষি খাতকে দখলে নিতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র কৃষিতে জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড অর্গানিজম (জিএমও) আনবেই এবং দেশটির বহুজাতিক কোম্পানিগুলো এই খাতে প্রবেশ করবে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) ঢাকায় প্রেস ইনস্টিটিউটে নাগরিক উদ্যোগ ও পিপলস হেলথ মুভমেন্ট আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণী উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণ ও দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি বিষয়ে সতর্ক পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন। বক্তব্য দেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ড. মোশাহিদা সুলতানা, ডা. জাহেদ মাসুদ, গওহর নইম ওয়ারা ও সালাউদ্দিন বাবলু। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বরকত উল্লাহ মারুফ এবং কারিগরি বিষয় তুলে ধরেন সানিয়া রিড স্মিথ।
মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘একটি ওয়ার্নিং দিয়ে রাখি—এরই মধ্যে আমেরিকানদের সঙ্গে যত কথাবার্তা হয়েছে, তারমধ্যে তারা কৃষিতে জিএমও (জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড অর্গানিজম) এনেই ছাড়বে। আমার মন্ত্রণালয় যেহেতু কৃষি মন্ত্রণালয় না, আমি এ বিষয়ে কিছু করতে পারছি না। কিন্তু আমেরিকানদের সঙ্গে যতই কথাবার্তা হচ্ছে, দেখা যাচ্ছে— তাদের জিএমও আনার জন্য কৃষিটাকে ওরা দখলে নিয়ে নেবে এবং কোম্পানিগুলো চলে আসবে।’
ফরিদা আখতার বলেন, ‘ব্রাজিল ও জাপান তো অনুরোধ করে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র যদি বলে কোনে কথাই বলতে পারবে না, মানতেই হবে। এরকম একটা অবস্থায় আছি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্টের বিষয়ে আমার মত হলো— একজন নাগরিক হিসেবে এটি আমরা গ্রহণ করতে পারি না। আমি নিজেই অসহায় বোধ করছি এটার জন্য।’
বাংলাদেশের বড় ঝামেলা হয়ে গেছে ট্রাম্পের ট্যারিফ- জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যেহেতু মৎস্য ও প্রাণিসম্পদে আছি, আমাদের কাছে যে কথাগুলো আসে— মাংস আমদানি করতে হবে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাংস এলে ৩০০ টাকায় মাংস খাওয়ানো যাবে, যেখানে এখন বাজারে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় গরুর মাংস খেতে হয়।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা যদি বলি যে, মাংস আমদানি করা যাবে না, তাহলে তারা বলে— বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় এটি অভিযোগ আকারে যাবে। ফলে আমরা এটা বলতে পারব না। আমাদেরকে বলতে হবে, আমরা কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছি না। আমরা মনে করছি, বাংলাদেশে ৯০ শতাংশ মুসলিম এবং এটি হালাল কিনা, সেটি নিয়ে প্রশ্ন উঠবে এবং এটার উত্তরে তারা বলছে— এখান থেকে তারা ৩০ হাজার মওলানা নিয়ে গিয়ে হালাল কায়দায় জবাই করে পাঠাবে। এগুলো আপনাদের আমি বলছি, এ কারণে যে, কোথায় গিয়ে চাপটা আছে।’